ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বাদ পড়াদের নিয়ে জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৯৮ লাখ

প্রকাশিত: ১৭:৪৫, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩; আপডেট: ২০:৩৬, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বাদ পড়াদের নিয়ে জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৯৮ লাখ

বিআইডিএস

  • বাদ পড়েছিল ২.৭৫ শতাংশ
  • বেশি বাদ পড়েছে শহরের মানুষ
  • শিশু ও বয়স্করা বেশি বাদ পড়েছে

দেশের জনশুমারিতে বাদ পড়াদের হিসেবের পর এখন মোট জনসংখ্যা দাড়িয়েছে ১৬ কোটি ৯৮ হাজার ২৮ হাজার ৯১১ জন। অর্থাৎ প্রাথমিক গণনায় শতকরা ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ মানুষ বাদ পড়েছিলেন।

জনসংখ্যার প্রাথমিক ফলাফলের ভুল সংশোধনের পর এমন তথ্য জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী  ড. শামসুল আলম।
সোমবার পরিকল্পনা কমিশনে জনশুমারির ভুল সংশোধনের তথ্য তুলে ধরে সরকারি গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জনসংখ্যার সংশোধিত তথ্য তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। তবে আগামী সাতদিনের মধ্যে জনসংখ্যার চূড়ান্ত তথ্য প্রকাশ করবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সেখানে প্রবাসী ও তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের যুক্ত করা হবে চূড়ান্ত হিসেব দেওয়া হবে।

এরআগে জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। সংশোধিত ফলাফলে ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ২৯৫ জন যোগ হয়েছে। বিআইডিএস কর্তৃক প্রকাশিত ‘পোস্ট ইনিউমেরেশন চেক (পিইসি) অব দ্য পপুলেশন অ্যান্ড হাউজিং সেন্সাস ২০২২’  শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। 

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সিটি করপোরেশন এবং শহর এলাকায়  সবচেয়ে বেশি মানুষ বাদ পড়েছিলেন। শতকরা এ হার যথাক্রমে ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। যা মোট বাদ পড়াদের হারের চেয়ে বেশি। এ বিষয়ে বিআইডএসের গবেষক ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, শহরের মানুষ দিনের বেলায় বাসায় না থাকায় বেশি বাদ পড়েছিলেন। তবে গত বারের আদমশুমারির চেয়ে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ কম বাদ পড়েছে এবার।

এদিকে এলাকাভিত্তিক হিসেবে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি বাদ পড়েছিলেনসিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের মানুষ। এসব এলকায় বাদ পড়াদের হার ছিল ৩ দশমিক ২৮ এবং ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ। তর পরে রয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মানুষ। তবে সবচেয়ে কম বাড় পড়েছিল খুলনা বিভাগের মানুষ। এছাড়া বরিশালে ২ দশমিক ৬১, চট্টগ্রামে ২ দশমিক ৭৩, ঢাকায় ২ দশমিক ৭৭, রাজশাহীতে ২ দশমিক ৬ এবং রংপুরে ২ দশমিক ১৪ শতাংশ মানুষ প্রাথমিক গণনায় বাদ পড়েছিল। বন্যার কারণে সিলেট ও ময়মনসিংহে বেশি মানুষ গণনার বাইরে ছিল বলে জানিয়েছে বিআইডিএস।

অন্যদিকে নারীদের তুলনায় পুরুষের বাদ পড়ার হার বেশি ছিল। তবে ৭৫ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষের বাদ পড়ার হার ছিল ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। অন্যদিকে ২০-২৪ বছর বয়স্ক মানুষের বাদ পড়ার হার ছিল ৩ দশমিক ৮১ শতাংশ। শিশুদের মধ্যেও এ হার ৪ শতাংশের বেশি ছিল। আর বয়স বলতে গিয়ে ৩৯ শতাংশ তথ্যে গড়মির পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে গবেষকরা বলছেন, দেশের মানুষ এখনও বয়স বলার ক্ষেত্রে সচেতন নয়। তাই এমন চিত্র উঠে এসেছে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, গুতুরত্বসহ জটিল এ কাজটি করেছে বিআইডিএস।

বিবিএসকে সামনে আরো দ্রুত ও বেশি বেশি হালনাগাদ তথ্য প্রকাশের তাগিদ দেন তিনি। আর সভাপতির বক্তব্যে ড. বিনায়ক সেন বলেন, ভুল অগের চেয়ে কমে এসছে। যা বিবিএস-এর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার প্রমাণ। পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার বলেন, প্রাথমকি গণনায় যারা বাদ পড়েছিল তাদের সবাইকে গণনার মধ্যে নেয়া হয়েছে। পরিসংখ্যান যত শুদ্ধ হবে পরিকল্পনা তত শুদ্ধ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আর আগামী সাতদিনের মধ্যে জনসংখ্যার চূড়ান্ত হিসেব তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। 

দেশের ৬৪ জেলার ৩৭৮টি এলাকা থেকে তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে বিআইডিএসের গবেষক দল। যেখানে কাজ করেছে ৩৫৪জন জন মাঠ কর্মী এবং ৩৬ জন পর্যবেক্ষক। পরবর্তীতে এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে বৈজ্ঞানিক পন্থায় এ প্রতিবেদন করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য,  ২০১১ সালের জনশুমারিতে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ মানুষ বাদ পড়েছিল। আর ২০০১ সালের জনশুমারিতে এ হার ছিল ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। সে হিসেবে বাদ পড়ার প্রবণতা কমে এসছে এবার। জনশুমারির নিয়ে আরো ১৩১ ধরণের তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে বিবিএস। 

ইয়াহইয়া নকিব

×