পুরস্কার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে বিজিবি মহাপরিচালকের বিশেষ দরবার, পদক ও পুরস্কার প্রদান এবং খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) পিলখানাস্থ সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি সদস্যদের বিশেষ দরবার গ্রহণ করেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ। বিজিবির খেতাবপ্রাপ্ত ১১৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীগণকে সংবর্ধনা, অনুদান ও উপহার প্রদান করা হয়।
দরবারের শুরুতেই বিজিবি মহাপরিচালক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারবর্গ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এ সময় তিনি বিজিবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ উপস্থিতির জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
বিজিবি মহাপরিচালক ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বিজিবির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। দরবারে বিজিবি মহাপরিচালক প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা কার্যক্রম, পারস্পরিক যোগাযোগ এবং খেলাধুলা ও শারীরিক উৎকর্ষতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বর্তমান সরকারের সানুগ্রহ পৃষ্ঠপোষকতায় সৈনিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য সকল ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এ সময় বিজিবি মহাপরিচালক সকল স্তরের বিজিবি সদস্যদেরকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি যেকোনো ধরনের অনৈতিক কাজ থেকে নিজেকে দূরে রেখে পারিবারিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার নির্দেশনা দেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির সূর্যসন্তান। তাদের ঋণ কোনো কিছু দিয়েই শোধ করা যাবে না। বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল সুযোগ-সুবিধা আগের তুলনায় বহুগুনে বৃদ্ধি করেছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের উত্তরসূরীদের জন্য সবসময় কাজ করে যাচ্ছে এবং আজীবন তাদের পাশে থাকবে।
তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারবর্গের বয়স বিবেচনা করে ও আসা যাওয়ার সুবিধার্থে এবার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের অঞ্চল ভিত্তিক সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছে। বর্তমান সরকার চাকরির ক্ষেত্রেও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং তাদের উত্তরসূরীদের অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। একইভাবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে চাকুরির ক্ষেত্রেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার এবং উত্তরসূরীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।
দরবার শেষে বিজিবিতে বীরত্বপূর্ণ এবং কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ অফিসারসহ মোট ৫৬ জন বিজিবি সদস্য এবং অসামরিক কর্মকর্তা/ কর্মচারীকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ মেডেল (বিজিবিএম), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ মেডেল সেবা (বিজিবিএমএস), প্রেসিডেন্ট বর্ডার গার্ড মেডেল (পিবিজিএম), প্রেসিডেন্ট বর্ডার গার্ড মেডেল সেবা (পিবিজি এমএস) এবং বর্ডার গার্ড অবদান মেডেল (বিজিওএম) এই পাঁচটি ক্যাটাগরিতে পদক প্রদান করা হয়। এরপর অপারেশনাল কর্মকাণ্ড, চোরাচালান নিরোধ এবং মাদকদ্রব্য আটকের ক্ষেত্রে কৃতিত্ব অর্জনকারী শ্রেষ্ঠ কোম্পানী/বিওপি কমান্ডার, শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষক/প্রশিক্ষণে অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জনকারী সর্বমোট ৩২ জনকে ব্যক্তিগত পুরস্কার প্রদান করা হয়। একইসঙ্গে চারটি শ্রেষ্ঠ ব্যাটালিয়নকে ট্রফি প্রদান করা হয়। পরে ৬৪ জনকে মহাপরিচালকের অপারেশনাল ও প্রশাসনিক প্রশংসাপত্র (ইনসিগনিয়াসহ) প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে চার জনকে অনারারী সুবেদার মেজর হতে অনারারী সহকারী পরিচালক এবং চার জনকে অনারারী সহকারী পরিচালক হতে অনারারী উপপরিচালক পদে পদোন্নতি প্রদান করে তাদেরকে র্যাংক ব্যাজ পরিধান করানো হয়।
উল্লেখ্য, বিজিবি মহাপরিচালকের দরবারে সকল রিজিয়ন, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন ভিটিসি এর মাধ্যমে সংযুক্ত ছিল। এছাড়াও সারাদেশের প্রত্যন্ত সীমান্তের ৪৫০টি বিওপি এমএস টিমস ও বিজিবির নিজস্ব রেডিও লিংকের মাধ্যমে দরবারে যুক্ত ছিল।
এমএইচ