ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

একটানা ক্ষমতায় ছিলাম বলে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে

প্রকাশিত: ১৮:৩১, ৬ অক্টোবর ২০২২; আপডেট: ২১:৫০, ৬ অক্টোবর ২০২২

একটানা ক্ষমতায় ছিলাম বলে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের একজন কাউন্সিলরও যদি বলে আমাকে চায় না, তাহলে আমি নেতৃত্বে থাকব না। দীর্ঘদিন তো হয়ে গেছে, অবশ্যই আমি চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক। কাউন্সিলররাই মূলত নেতৃত্ব ঠিক করে, তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন, আমরা একটানা ক্ষমতায় ছিলাম বলে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। এখন বিদায় নেওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার যাওয়ার আসলে সময় হয়ে গেছে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বাংলাদেশ স্বাধীন করে একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধন করে স্বল্প-উন্নত দেশের মর্যাদা অর্জন করে দিয়ে যান। জাতিসংঘ এর স্বীকৃতি দিয়েছিল। এরপর এ দেশে কী ঘটেছে? গণতন্ত্র ছিল না, তার পরিবর্তে ছিল মিলিটারি শাসন। অনেক চড়াই উৎরাই পার করে আমরা গণতন্ত্র উদ্ধার করি। একটানা ৩ বার, ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে ২০২২ সাল পর্যন্ত, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম একটানা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে।

তিনি আরও বলেন, এর মাঝে অনেক চড়াই উৎরাই, খুন খারাবি, অগ্নি সন্ত্রাসসহ নানা কিছু ঘটিয়েছে। তারপরও আমরা একটানা ক্ষমতায় ছিলাম বলে উন্নয়নশীল দেশে আমারা উন্নীত হয়েছি। এখন বিদায় নেওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত।
 
মিয়ানমার সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়ে আসছে। মানবিক কারণে নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ সাময়িক আশ্রয় দিয়েছি।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে সম্মানের সঙ্গে ও নিরাপদে তাদের নিজ দেশে ফিরতে পারে সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।

এবার জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানোর কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করার জন্য জাতিসংঘকে কার্যকর ও জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছি।

জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে রাশিয়া-ইউক্রেন বিরোধ নিরসনের আহ্বান জানানোর কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের ফলে সৃষ্ট খাদ্য ও জ্বালানি সঙ্কট এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তির জন্য অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে অধিক পারস্পরিক সংহতি প্রদর্শন করার প্রতি গুরুত্বারোপ করি। এসব সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা-নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট ও বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই। চলমান সঙ্কট নিরসনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তি ও উন্নয়ন ভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতির প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরি।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র এবং রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে যোগদান উপলক্ষে লন্ডন সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে টানা ১৮ দিনের সফর শেষে গত সোমবার (৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত একটার দিকে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। 

গত ১৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যে যান শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এবং রাজা চার্লস তৃতীয় আয়োজিত অভ্যর্থনায় যোগ দেন। পরে ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি নিউইয়র্কের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের সময় ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। সফরের শেষ সপ্তাহে ওয়াশিংটনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি।

 
 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×