
ড. এ কে আব্দুল মোমেন
চারদিনের সফরের প্রথমদিনে ঢাকায় এসেই জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সঙ্কোচন, সুশীল সমাজসহ মানবাধিকারের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড আগে হলেও এখন নেই। এছাড়া বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রয়েছে।
রবিবার সকালেই ঢাকায় পৌঁছে মিশেল ব্যাচেলেট রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন। মিশেল ব্যাচেলেট পর্যায়ক্রমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা, এনজিও, একাডেমিয়া, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অন্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।
এর আগে মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে তিনি সকালে ঢাকায় পৌঁছান। জাতিসংঘের কোনও মানবাধিকার প্রধানের এটিই হলো প্রথম সরকারী সফর। রবিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মিশেল ব্যাচলেটকে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট প্রথম বৈঠক করেন ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। মিশেলকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা আগে হলেও এখন নেই। তিনি বলেছেন, বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে কোন তথ্য পেলে সরকার তা তদন্ত করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে তারা (জাতিসংঘ) বলেনি। আমরা নিজে থেকে বলেছি। এ রকম বলা হয়েছে যে, কিছু লোককে কিলিং করা হয়েছে। আমাদের এখানে আগে হতো ২০০০, ২০০৩ ওই সময়ে। বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে আমরা কোন তথ্য পেলে তদন্ত করা হবে তাদের নিশ্চিত করা হয়েছে।
বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে ড. মোমেন জানান, কিছু কিছু লোক নাকি বলেছে যে, ৭৬ জন লোক গত ১০ বছরে নিখোঁজ হয়ে গেছে। তারা (জাতিসংঘ) বলেছে, সরকার নাকি নিখোঁজ করেছে। ৭৬ জনের মধ্যে আবার ১০ জনকে দেখা যায় পাওয়া গেছে। বাকিগুলো আমরা ঠিক জানি না। পরিবার কোন তথ্য দেয় না। পরিবারকে বলা হয়, তারা ভয়ে আর কোন তথ্য দেয় না। আমরা জানি না তারা কোথায় গেছেন।
আলোচনায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রসঙ্গটি এসেছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওদের (জাতিসংঘ) ধারণা বাংলাদেশে টেলিভিশন মিডিয়া এগুলোতে কোন স্বাধীনতা নেই। কেউ নিজের কথা বলতে পারে না। তাদের (গণমাধ্যম) সেন্সর করে। আমি বলেছি, আমার এমন কিছু জানা নেই। আমি তো দেখি আমাদের মিডিয়া ভেরি স্ট্রং। প্রাইভেট টেলিভিশন একটা কথা বললে ধরে ফেলে।
মিডিয়ার স্বাধীনতার প্রসঙ্গে বলেছি, আমরা এ সম্পর্কে জানি না। কিন্তু কেউ কেউ মনে হয় মনে করে। তারা মনে মনে চিন্তা করে। তাদের বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অনেকগুলো মিডিয়া রেজিস্ট্রার্ড হয়েছে।