গণপরিবহন সঙ্কটে দুর্ভোগে পড়েন কর্মজীবী মানুষ
হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজধানীসহ দেশজুড়ে গণপরিবহনে দেখা দেয় নৈরাজ্য। সরকারের সঙ্গে বৈঠক করার আগেই মালিক সমিতির নির্দেশে শনিবার সকাল থেকেই প্রায় সব গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া নেয়া শুরু হয়। তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে মালিক সমিতি এদিন অর্ধেক বাসও নামায়নি। এতে নজিরবিহীন পরিবহন সঙ্কট দেখা দেয়। পরিবহন কম থাকায় তাতে উঠতে যাত্রীদের রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। আবার বাসে ওঠার সুযোগ পেলেও অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়েছে যাত্রীদের।
দিনভর চলেছে রাজধানীসহ দেশজুড়ে নৈরাজ্য। রাজধানীতে গণরোষের শিকার হয় পুলিশের গাড়ি। ক্ষোভ বিক্ষোভে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। বিকেলে বিআরটিএ- নতুন ভাড়া নিয়ে বৈঠকে বসে। রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৈঠক চলছিল। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ভাড়া সমন্বয় করে বাস চলাচলের বিষয় নিশ্চিত করতে বৈঠকে বসেন পরিবহন নেতা এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। শনিবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে বনানীর বিআরটিএর চেয়ারম্যান কার্যালয়ে এই বৈঠক শুরু হয়।
এতে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ আজিজুল ইসলাম, পরিচালক (অপারেশন) মোঃ লোকমান হোসেন মোল্লা সচিব এটিএম কামরুল ইসলাম তাং, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, পরিবহন মালিক, কনজ্যুমারস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাসভাড়া কিলোমিটারে সর্বোচ্চ ২৯ পয়সা এবং লঞ্চ ভাড়া ৪২ পয়সা বাড়তে পারে বলে ধারণা দেয়- বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দূরপাল্লার বাসে বর্তমানে (৫২ আসনের) প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ১ টাকা ৮০ পয়সা। ডিজেলের দাম বাড়ানোয় ২৯ পয়সা বেড়ে এ ভাড়া হবে ২ টাকার মতো। অর্থাৎ প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ।
শহর এলাকায় (৫২ আসনের) বাসে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া এখন ২ টাকা ১৫ পয়সা। এটি ২৮ পয়সা বেড়ে ২ টাকা ৪৩ পয়সার মতো হবে। অর্থাৎ প্রতি কিলোমিটারে বাড়বে ১৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। এ ছাড়া লঞ্চে বর্তমানে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ২ টাকা ১৯ পয়সা। ৪২ পয়সা বেড়ে এ ভাড়া হবে ২ টাকা ৬২ পয়সা।
প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে ১৯ দশমিক ১৮ শতাংশ।
নৈরাজ্য দেশজুড়ে ॥ শুধু রাজধানী নয়, গোটা দেশজুড়েই ছিল পরিবহন সঙ্কট। ছিল বাড়তি ভাড়া আদায়ের সীমাহীন নৈরাজ্য। যে যেভাবে পেরেছে জিম্মি করে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করেছে দ্বিগুণ তিনগুণ অতিরিক্ত ভাড়া।
রাজধানীর উত্তরা, বনানী, গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, মহাখালী ও ফুলবাড়িয়া বাস কাউন্টার ঘুরে যাত্রীদের কাছ থেকে এ অভিযোগ পাওয়া যায়। শ্যামলীতে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে করা মিছিল থেকে পুলিশের একটি গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। দুপুরে ব্যানারবিহীন একটি মিছিল থেকে এ ভাংচুর চালানো হয়।
শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উৎপল বড়ুয়া বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে একটি মিছিল হয়েছে। ওই মিছিল থেকে পুলিশের একটি গাড়ির গ্লাস ভাংচুর করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে গাড়িটি কোন থানার তা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। এ বিষয়ে কাজ চলছে।
বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন কারা করেছিল জানতে চাইলে ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেন, মিছিলের সামনে কোন ব্যানার ছিল না। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ করেছেন। যে গাড়িটি ভাংচুরের কথা শোনা যাচ্ছে সেটি আমাদের থানার গাড়ি না। গাড়ি ভাংচুরের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, শ্যামলী থেকে শতাধিক মানুষের একটি বিক্ষোভ মিছিল সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিল। পথে শ্যামলী শিশু মেলার সামনে রাখা পুলিশের একটি টহল ভ্যানে ভাংচুর চালান বিক্ষোভকারীরা। গাড়ির সামনের গ্লাস ভেঙ্গে ফেলা হয়।
এদিন বাস কাউন্টারগুলোতে দেখা যায়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অনুমতি ছাড়াই প্রতিটি বাসে আসনপ্রতি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেশি ভাড়া নেয়া হয়। এতে বিপাকে পড়েন দূরপাল্লার যাত্রীরা। দূরপাল্লার মামুন পরিবহন, আল-মোবারাকা পরিবহন, শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসসহ কয়েকটি পরিবহনের বাস চলছে না। তারা জানান, তেলের দাম বাড়ায় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কল্যাণপুর এসবি সুপার ডিলাক্সের ম্যানেজার মোঃ তোয়েব বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় আমাদের বাসে ৩০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এতে করে ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ার নন-এসি বাসের ভাড়া ৫৫০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। ৮০০ টাকার এসি বাসের ভাড়া বাড়িয়ে এক হাজার ৪০ টাকা করা হয়েছে।
ঢাকা থেকে ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, দর্শনা ও মেহেরপুরের দূরপাল্লার পরিবহন রয়েল এক্সপ্রেসের গাবতলী কাউন্টারের ম্যানেজার মোঃ রমজান আলী বলেন, ঢাকা থেকে আমাদের গাড়িতে প্রতি সিটে নন-এসি বাসে ভাড়া বেড়েছে ১৫০ টাকা ও এসিতে ২০০ টাকা। সায়েদাবাদে শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার প্রতিনিধি মোঃ রনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটে ভাড়া ছিল ৫৭০ টাকা।
এখন তা বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ৯০০ টাকার ভাড়া বাড়িয়ে এক হাজার ২০০ টাকা করা নেয়া হয়। ঢাকা-বরিশাল রুটের ভাড়া ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫৫০ টাকা করা হয়েছে। এভাবে দেশের প্রতিটি রুটের বাসভাড়া বাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে। হানিফ পরিবহনের কাউন্টার প্রতিনিধি ফয়সাল জানান, প্রতিটি বাসে ১০০ টাকা থেকে দেড় শ’ টাকা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।
তবে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসগুলোতে আগের ভাড়াই রাখছে মালিকপক্ষ। গ্রিনলাইন বাসের কল সেন্টারের কলটেকার শামীমা আক্তার বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোন ঘোষণা আসেনি। তাই আগের ভাড়াই নেয়া হচ্ছে।
বেশ কয়েকটি এলাকায় দেখা গেছে, বাসের জন্য অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন। মাঝে মধ্যে দু-একটি বাস এলেও সেগুলো যাত্রীতে ঠাসা। দু-একজন নেমে গেলে অপেক্ষারতরা বাসে ওঠার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। দু-একজন বাসে ঠাঁই পেলেও বাকিরা হতাশ হয়ে পরের বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর হেঁটেই রওনা করেছেন অনেকে।
বাংলামোটর মোড়ে দেখা গেছে, যাত্রীতে ঠাসা শিকড় পরিবহনের একটি বাস আসে। গেটেও কয়েকজন দাঁড়ানো। এরমধ্যেই বাসে ওঠার চেষ্টা করলে চালকের সহকারী বলেন, ১৫ টাকার কম হলে কেউ বাসে উইঠেন না। ওই বাস থেকে নেমে মোঃ ইয়াসিন বলেন, দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর কোনরকম বাসে উঠেছিলাম। ১০ টাকার ভাড়া ১৫ টাকা নিয়েছে। তবে, বাস সঙ্কটের কারণে পোয়াবারো রিক্সাচালকদের। সুযোগ বুঝে তারাও বাড়িয়েছেন দাম।
কাওরান বাজার থেকে মাকে নিয়ে বারডেম হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বেশ খানিকটা সময় অপেক্ষা করেও সিএনজি মেলেনি হাবিবুর রহমানের। উপায় না পেয়ে বাংলামোটর পর্যন্ত মাকে হাঁটিয়ে নিয়ে আসেন। কয়েকটি রিক্সা পাওয়া গেলেও সবাই ৫০ টাকার ওপরে দাম হাঁকেন। হাবিবুর বলেন, এইটুকু জায়গার জন্য ৫০ টাকা ভাড়া! কোন দেশে আছি আমরা। যে যেভাবে পারছে- নিচ্ছে।
ঢাকার বাইরের চিত্র ॥ একই অবস্থা ছিল ঢাকার বাইরেও। দেশের উত্তররাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চল পূর্ব থেকে পশ্চিম সর্বত্রই ছিল পরিবহন সঙ্কট ও ভোগান্তি।
সকালেই গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবং আঞ্চলিক সড়কগুলোতে গণপরিবহনের তীব্র সঙ্কট দেখা দেয়। অফিসগামী সাধারণ মানুষ এবং স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থেকেও কোন যানবাহন পাননি। এছাড়া লোকাল বাসগুলোতে বাসের ভাড়া দ্বিগুণ আদায় করা হয়। স্বল্প পরিসরে যে সকল যাত্রীবাহী বাস চলাচল করেছে তাতেও তিল ধরার ঠাঁই ছিল না। বাসের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাস না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন যাত্রীরা।
দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর বোর্ডবাজার এলাকায় দেখা যায়, সকাল থেকে শত শত যাত্রী প্রচ- রোদের মধ্যে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ানো। স্কুল শিক্ষার্থী রায়হান আহমেদ জানায়, এক ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও কোন বাসের দেখা নেই। কোন বাস পাওয়া গেলেও তারা দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করে। বলাকা পরিবহনের চালক ইদ্রিস আলী জানান, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনতে হয়। যার কারণে ভাড়া বেশি নিতে হচ্ছে। লোকসান দিয়ে আমরা গাড়ি চালাতে পারব না।
যাত্রীদের সঙ্গে ঝামেলার কারণে অনেক মালিক তাদের বাস বন্ধ রেখেছেন। গাজীপুর মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে বাসের থেকে যাত্রীসংখ্যা অনেক বেশি থাকায় মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীদের ভিড় লেগে যায়। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া কথা শোনা গেলেও কেউ কোন অভিযোগ করেনি।
গাজীপুর ছাড়াও কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসার পথেও একই ভোগান্তির শিকার হয়েছেন যাত্রীরা। তেলের অজুহাতে রাস্তায় বাস কম- সেজন্য অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে নিয়েছে চালকরা। এছাড়া সিলেট চট্টগ্রাম, খুলনা বরিশাল যশোর, রাজশাহী বগুড়াসহ গোটা দেশজুড়েই ছিল পরিবহন সঙ্কট। ছিল ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাগযুদ্ধ। ভোগান্তির শিকার হয়ে অনেকেই ঘরে ফিরে গেছেন গন্তব্য বাদ দিয়ে।
উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় আসার ক্ষেত্রে যাত্রীরা ছিল চরম অসহায়। একদিকে বাসের সঙ্কট অন্যদিকে তিনগুণ ভাড়ার চাপে যাত্রীরা ছিলেন দিশেহারা।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে সিরাজগঞ্জের মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন ২২ জেলার প্রায় হাজারও যানবাহন চলাচল করে। তবে শনিবার দুপুর পর্যন্ত এই মহাসড়কটি ফাঁকা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে জেলার গুরুত্বপূর্ণ হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় দেখা যায় একই চিত্র, বিভিন্ন মোড়ে যানবাহনের অপেক্ষায় যাত্রীরা। হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় যানবহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা বলেন, সকাল থেকেই বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন।
দুই-একটি বাস আসলেও সিট নেই এবং ভাড়া অনেক বেশি, সেজন্য উঠতে পারেননি। তবে অনেকেই ভাড়া বেশি দিয়েই কর্মস্থলে যাচ্ছেন। এসআই এন্টারপ্রাইজের চালক ফরিদুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে আমরা গাড়ি নিয়ে বের হইনি। সরকার তেলে দাম বাড়িয়েছে কিন্তু আমাদের বাস ভাড়া বাড়ায়নি। যাত্রীরাও দুর্ভোগে পড়েছে। যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে আমাদের ছেলে-মেয়ে নিয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হবে।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধি ও বৃষ্টির কারণে অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে যানবহনের চাপ একটু কম।
চট্টগ্রামে পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সকালে। কিন্তু বিআরটিএ-এর বৈঠকের কথা শুনে বিকেলে তা প্রত্যাহার করা হয়। একই অবস্থা ছিল রাজশাহীতেও।
পরিবহনে ফের নৈরাজ্য হবে ॥ এদিকে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তেলের দাম বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক বলে উল্লেখ করে বলেছেন, বিশ্ববাজারে বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম নিম্নমুখী। এ সময়ে বাজার পর্যবেক্ষণ না করে কেবল আইএমএফের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে দিশেহারা দেশের সাধারণ মানুষের চরম এক দুঃসময়ে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।
শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে এই দাবি জানান তিনি।
এর আগে শুক্রবার (৫ আগস্ট) দিনগত রাত থেকেই কার্যকর হয়েছে সরকার ঘোষিত ডিজেল, পেট্রোল, কেরোসিন, ও অকটেনের নতুন দাম। দাম বেড়েছে প্রতি লিটার ডিজেলে ৩৪, কেরোসিনে ৩৪, অকটেনে ৪৬, পেট্রোলে ৪৪ টাকা। দাম বাড়ার পর প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও প্রতি লিটার পেট্রোল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা তেলের দাম ছিল প্রতি লিটার ডিজেল ৮০ টাকা, কেরোসিন ৮০ টাকা, অকটেন ৮৯ টাকা ও পেট্রোল ৮৬ টাকা।