ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান

প্রকাশিত: ০০:১৯, ১ জুলাই ২০২২

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

ভোগান্তির বৃষ্টি

প্রমত্তা পদ্মার ওপর বিশাল সেতু নির্মাণ করা হয়েছেদেশের টাকায় এমন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক শক্তি ও সক্ষমতা বিপুলভাবে প্রকাশিত হয়েছেসঙ্গত কারণেই স্থাপনাটি নিয়ে বাঙালীর গর্বের শেষ নেইগত শনিবার সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ গর্বের সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটানো হয়েছে, বলা যায়উদ্যাপনের আনুষ্ঠানিকতা ছিল ঢাকাতেওকারণ পদ্মা সেতু ঢাকার সঙ্গে তিন বিভাগের মোট ২১টি জেলাকে যুক্ত করেছেসেতু চালু হওয়ার পর এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে রাজধানীতেকর্মসূত্রে ঢাকায় অবস্থান করা অনেকেই উদ্যাপনের অংশ হিসেবে পদ্মা সেতু পাড়ি দিচ্ছেনঅল্প সময়ের মধ্যে গ্রামের বাড়ি পৌঁছে দারুণ মুগ্ধ তারানানাভাবে সেই মুগ্ধতা প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছেসদরঘাটের ভিড়ও ক্রমশ কমছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছেতারও আগে শেষ হয়েছে ফেরির ভোগান্তিআর ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সেতুর যে ভূমিকা তা তো বলার অপেক্ষা রাখে নাসব মিলিয়ে রাজধানীবাসীও বেশ উচ্ছ্বসিততবে এ উচ্ছ্বাসই শেষ কথা নয়আছে উদ্বেগওশিক্ষক খুন এবং লাঞ্ছনার পৃথক দুটি ঘটনায় মারাত্মক উদ্বিগ্ন এখন ঢাকার নাগরিক সমাজপদ্মা সেতুর আনন্দঘন আলোচনায় এ উদ্বেগের বিষয়টি কেন আসবে? কারও কারও মনে, হ্যাঁ, এমন প্রশ্ন জাগতেই পারেতাদের উদ্দেশ্যে বলি, খুব প্রাসঙ্গিকভাবেই আসবেপ্রাসঙ্গিকতার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে নাগরিক সমাজ বলছে, অর্থনৈতিকভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছেঅবকাঠামোগত উন্নয়ন স্পষ্টকিন্তু মানুষের মনোজগতের, চিন্তার কোন উন্নতি হচ্ছে নাবরং অনেকে মানুষপরিচয়টি ভুলে যাচ্ছেগভীর অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে কিশোর তরুণদের একটি অংশশিক্ষার্থীরা ধর্মীয় মৌলবাদীদের দ্বারা বিভ্রান্ত হচ্ছেপরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষককে অবলিলায় অপদস্ত করছে তারাখুন করতে দ্বিধা করছে নাএ কোন সমাজ? প্রশ্ন তোলা হচ্ছে ঢাকা থেকেওরাজধানীর শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষেরা বলছেন, অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে সমাজপচে গলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছেএ অবস্থায় শুধু পদ্মা সেতু বা মেট্রোরেল চালু করলে হবে নাটেকসই উন্নয়নের জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ চাইমানুষের মতো মানুষ এবং মানুষের সমাজ গড়ে তোলার ওপর জোর দিচ্ছেন তারা। 

ভোগান্তির বৃষ্টি বর্ষা এবার ব্যাপক ভোগাচ্ছেআষাঢ় মাসের শুরুতেই অতি বৃষ্টিভারি বর্ষণবন্যায় কত মানুষ যে ক্ষতিগ্রস্ত হলো! এ কারণেই হয়তো ঢাকার বৃষ্টি এখন আর ভাল লাগছে নাবৃষ্টি হলেই বিরক্ত হচ্ছে মানুষবৃহস্পতিবারের কথাই যদি বলি, এদিন লম্বা সময় ধরে বৃষ্টি হয়েছেকখনও কমকখনও বেশিএ অবস্থায় কাজে বের হওয়া মানুষজনকে বেশ দুর্ভোগে পড়তে হয়কেউ কাক ভেজা হয়েছেনকেউ ভিজে একাকারআবার একটু সতর্ক যারা তারা ছাতা হাতে নিয়েই বের হয়েছিলেনশ্যামলী এলাকার একটি রাস্তায় লক্ষ্য করে দেখা যায়, কর্মজীবীদের অনেকেই মাথার ওপর ছাতা ধরে পথ হাঁটছিলেনএকজনের সঙ্গে কথাও হলোতিনি বলছিলেন, এখন সামান্য বৃষ্টিতেই ঠাণ্ডা লেগে যাচ্ছেজ্বর চলে আসছে গায়েএ কারণে বৃষ্টিতে একদমই ভিজতে চাই নাবন্যা আক্রান্ত মানুষের কষ্ট দেখে বৃষ্টির প্রতি এবার আর প্রেম দেখাতে পারছেন না বলেও জানান তিনি! 

মশা মারতে ড্রোন মশা মারতে কামান দাগানোর কথা তো খুব প্রচলিততবে এবার কামান নয়, ড্রোন ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছেড্রোনের সাহায্যে  ঢাকার উত্তর অংশে মশার উস খোঁজা হচ্ছেখোঁজাখুঁজির মধ্যেই বৃহস্পতিবার উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরে এ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামফলে বিষয়টি প্রচারে আসেজানা যাচ্ছে, ড্রোনের মাধ্যমে আগামীকাল শনিবার থেকে ১০ দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান চালাবে উত্তর সিটি কর্পোরেশনএদিন শুরু হয়ে ১১ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা উত্তরের আওতাধীন প্রতিটি বাসাবাড়িতে কার্যক্রম চালানো হবেড্রোন থেকে ছবি ও তথ্য-উপাত্ত নিয়ে যেসব বাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়া যাবে, তা দিয়ে একটি তথ্যভা-ার তৈরি করবে সিটি কর্পোরেশনএসব তথ্য মশক নিধন কার্যক্রমে বিশেষ কাজে আসবে বলে মনে করছেন মেয়র আতিকবাস্তবে কী হবে তা হয়তো ভবিষ্যত বলবেতবে আতিকুল ইসলাম নানা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে নিয়মিত যানযাচ্ছেনতার এমন চেষ্টার প্রশংসা করতে হবেনা করলেই নয়

×