ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পরিচয়ে প্রতারণা ॥ জামাই-শ্বশুর আটক

প্রকাশিত: ২২:৪২, ২৩ মে ২০২২

সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পরিচয়ে প্রতারণা ॥ জামাই-শ্বশুর আটক

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন (ভুয়া) পরিচয় দিয়ে শ্বশুরের সহযোগিতায় গ্রামের বেকার যুবকদের চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রতারণার বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলার গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ প্রতারণার প্রধান সহযোগী শ্বশুর রকিব বেপারিকে আটক করেছেন। রবিবার সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের বরাত দিয়ে থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন জানান, গৌরনদী পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রকিব বেপারি ও তার মেয়ে জামাতা (সেনাবাহিনীর ভুয়া ক্যাপ্টেন পরিচয়দানকারী) কবির হোসেন প্রতারণার মাধ্যমে গ্রামের বেকার যুবকদের সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। অভিযুক্ত কবির হোসেন ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার ছোট দিঘাটি গ্রামের বাসিন্দা। তিনদিন আগে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানা পুলিশ তাকে (কবির) আটক করে। গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের অভিযানে আটক রকিব বেপারির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। গৌরনদীর টরকী চর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ শাহাবুদ্দিন বলেন, রকিব বেপারি তার ছোট মেয়ের জামাতা কবির হোসেনকে এলাকাবাসীর কাছে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। এমনকি সেনাবাহিনীর পোশাক পরে কবির হোসেন তার শ্বশুরালয়ে একাধিকবার এসেছেন। তিনি আরও জানান, তার ছেলে ওসমান মোল্লাকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে রকিব বেপারি ও তার মেয়ে জামাতা কবির হোসেন সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ওসমান মোল্লার চাকরি হয়েছে মর্মে সেনাবাহিনীর একটি পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়। একই এলাকার বাসিন্দা দলিল উদ্দিন হাওলাদারের পুত্র সজিব হাওলাদার জানান, ছয় মাস আগে তাকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার বাবার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় রকিব ও কবির। তাকেও সেনাবাহিনীর একটি পরিচয়পত্র দেয়া হয়। মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার চরফতে বাহাদুরপুর গ্রামের মাহমুদ হোসেন জানান, তাকেও চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্র। পরবর্তীতে তাকে সেনাবাহিনীর পরিচয়পত্র দিয়ে ঢাকায় নিয়ে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে দারোয়ানের চাকরি দেয়া হয়। এতে তিনি আপত্তি জানানোর পর তাকে অভিযুক্ত কবির হোসেন তার বাসায় নিয়ে আটকে রাখে। মাহমুদ হোসেন আরও জানান, কবিরের বাসা থেকে তিনি ৭০ চাকরি প্রত্যাশীর জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্ড ও অন্যান্য কাগজপত্র উদ্ধার করেছেন। এমনকি কবির হোসেনের বাসায় কয়েক কোটি টাকাও তিনি দেখেছেন। ভুক্তভোগীরা আরও জানান, তিনদিন পূর্বে লৌহজং থানা পুলিশের হাতে কবির হোসেন আটক হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তারা ওই থানায় গিয়ে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
×