ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শীতকালীন আগাম সবজি উঠতে শুরু করেছে, দাম চড়া

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ৩ অক্টোবর ২০১৫

শীতকালীন আগাম সবজি উঠতে শুরু করেছে, দাম চড়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চড়া দামে বাজারে মিলছে শীতকালীন সবজি। পাওয়া যাচ্ছে কচি লাউ, তাতে চিমটি কেটে বেছে নিচ্ছেন ক্রেতা। পাওয়া যাচ্ছে লাউয়ের ডোগাও। মুলা, মুলাশাক, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো ও শসাসহ শীতকালীন আগাম সব সবজি উঠতে শুরু করেছে বাজারে। তবে দাম এত বেশি যে, এগুলো এখনও সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে রয়েছে। প্রতিটি ছোট আকারের লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। প্রতি জোড়া ছোট ফুলকপিতে ৮০-৯০ টাকা গুনতে হচ্ছে ভোক্তাকে। কাঁচামরিচ সেই আগের মতো ২০০ টাকা এবং পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর প্রজনন রক্ষায় মাছ ধরা ও বিক্রি বন্ধ থাকায় বাজারে কোন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। ইলিশ কিনতে না পেরে তাই অনেকে হা-হুতাশ করছেন। এদিকে কোরবানির পর সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার প্রথম বাজার করতে এসে নিত্যপণ্যের বাড়তি দরদামে ভোক্তারা অতিষ্ঠ। তবে সান্ত¡না এই যে, বাজারে সবজির আইটেম বাড়তে শুরু করেছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে সবজির দাম কমতে পারে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তাঁরা বলছেন, এবারের অতি বৃষ্টি ও অনেক স্থানে বন্যার কারণে সবজিক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তবে পানি নামতে শুরু করায় ফের সবজি উৎপাদন শুরু হয়েছে। এসব সবজি চলতি মাসের মাঝামাঝি ও শেষ নাগাদ বাজারে ওঠা শুরু হবে। আর তখনই দাম কমে আসবে। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে কাওরান বাজারের সবজির পাইকারি বিক্রেতা মো. জসিম উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, কোরবানির পর আজই (শুক্রবার) কাঁচা বাজারে বেচাবিক্রি শুরু হয়েছে। কোরবানির ছুটিতে বেপারীরা সবজি আনা কমিয়ে দিয়েছেন। বাজারের অধিকাংশ পাইকার, মহাজন ও খুচরা বিক্রেতারা ছুটি কাটাতে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। তবে ছুটি শেষে তারা ফিরে আসায় আবার বেচাবিক্রি বেড়েছে। সরবরাহ কম হওয়ায় দাম একটু বেশি। এছাড়া বন্যা ও বৃষ্টিতে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আগে থেকেই সবজির দাম বাড়তি ছিল। কোরবানির পরও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ভাল খবর হলো, ইতোমধ্যে শীতকালীন আগাম সবজি আসা শুরু হয়েছে। দাম বেশি হলেও ভোক্তারা এগুলো পাচ্ছেন। তবে পুরোমাত্রায় সরবরাহ শুরু হলে সবজির দাম কমে আসবে। এদিকে, গত এক সপ্তাহ বিভিন্ন পদ ও আইটেমের কোরবানির মাংসের স্বাদ নিয়েছেন ভোজনরসিকরা। স্বাদের ভিন্নতা আনতে তাই ছুটির দিনে অনেকেই ছুটে গেছেন বাজারে। ভিড় ছিল মাছ বাজারেই। কিন্তু অন্যান্য মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কোথাও ইলিশের দেখা মেলেনি। এ নিয়ে অনেকে রীতিমতো বিরক্ত। বিক্রেতারা জানালেন, এবার ইলিশ রক্ষায় প্রজনন মৌসুমে ১৫ দিন ইলিশ ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সরকার। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত এটা বলবৎ থাকবে। এ কারণে বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে কাপ্তান বাজারের মাছ বিক্রেতা সুনীল কৈবর্ত্য জনকণ্ঠকে বলেন, জেল জরিমানার ভয়ে কেউ ইলিশ মাছ বিক্রি করছে না। অনেকেই আসছেন, কিন্তু ইলিশ কিনতে পারছেন না। তিনি বলেন, ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ থাকায় বাজারে ইলিশের কোন সবরবাহ নেই। অন্যান্য বছরে চুরি-চামারি করে কেউ কেউ ইলিশ ও জাটকা বিক্রি করলেও এবছর কেউ সাহস দেখাচ্ছে না। তবে ভোক্তারা বলছেন, ১৫ দিন বাজারে ইলিশ পাওয়া যাবে না এটা তো আর সেভাবে জানানো হয়নি। জানলে আগেই ইলিশ কিনে রাখা হতো। ইলিশের খোঁজ করছেন পুরনো ঢাকার নবগ্রামের বাসিন্দা আসলাম মিয়া। তিনি বলেন, তার দুই বাচ্চা শুধু ইলিশ মাছ খায়। ইলিশ না পাওয়ায় বাচ্চাদের খাওয়ানো কষ্ট হবে। গত কয়েক দিন মাংস খেয়েছে। এখন পাতে ইলিশ চায়। আর এ কারণে ইলিশ কিনতে আসা। কিন্তু বাজারে ইলিশের কোন ছায়াও দেখা যাচ্ছে না। এইভাবে বিক্রি বন্ধ করতে হলে টেলিভিশন, রেডিও এবং সংবাদ মাধ্যমে ভালভাবে প্রচার-প্রচারণা থাকা দরকার বলে জানালেন তিনি। জানা গেছে, ঈদের পর নিত্যপণ্যের বাজারে সবজির পাশাপাশি ডিম, পেঁয়াজ, ও আলুর দাম বেড়েছে। প্রতিহালি ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩২-৩৫ টাকায়। এছাড়া গোল আলু ২৫-৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল ও চিনির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। এছাড়া কমেছে ব্রয়লার ও দেশী মুরগির দাম।
×