
ছবি: সংগৃহীত।
বাইরে যখন মেঘ গর্জে ওঠে আর বৃষ্টি ঝরে টুপটাপ করে, তখন কি আপনার বাসার ইন্টারনেটও আচমকা “স্লো মোডে” চলে যায়? ভিডিও কল ক্র্যাশ করে, স্ট্রিমিং লোডিংয়ে পড়ে, এমনকি একটা ওয়েবসাইট খুলতেই যেন চিরকাল লাগে?
যদি এমনটা প্রায়ই হয়, তবে আপনি একা নন। বর্ষায় ইন্টারনেট গতি কমে যাওয়ার ঘটনা অনেক ব্যবহারকারীরই পরিচিত অভিজ্ঞতা। তবে কেন এমন হয়, আর আপনি কী করতে পারেন? চলুন, জেনে নিই।
কেন বৃষ্টির সময় ইন্টারনেট ধীর হয়?
১. রেডিও ওয়েভে বৃষ্টির প্রভাব
মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ওয়াই-ফাই যেহেতু রেডিও তরঙ্গে চলে, তাই বৃষ্টির ফোঁটা বা বাষ্প অনেক সময় সিগন্যাল দুর্বল করে দেয়। একে বলে Signal Attenuation।
২. ভিজে যায় ফাইবার বা ডিশ ক্যাবল
ফাইবার অপটিক লাইন বা ডিস সংযোগ যদি খোলা জায়গায় থাকে, তবে সেখানে পানি ঢুকে ইন্টারনেট ট্রান্সমিশন ব্যাহত হতে পারে।
৩. রাউটার বা ডিশে পানি জমে
ছাদ বা জানালার পাশে রাখা রাউটার বা এক্সটেন্ডারে বৃষ্টির পানি জমে গেলে সিগন্যাল দুর্বল হয়।
৪. লোডশেডিং ও ব্যাকআপ সংকট
বৃষ্টির সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে অনেক টেলিকম টাওয়ার বা ISP রাউটার পর্যাপ্ত ব্যাকআপ দিতে পারে না।
৫. একসাথে বেশি ব্যবহারকারী
বৃষ্টির দিনে সবাই ঘরে থাকেন। ফলে একই সময়ে অনেক ডিভাইস ইন্টারনেট ব্যবহার করে, যার ফলে নেটওয়ার্কে চাপ পড়ে।
বৃষ্টিতে ধীর ইন্টারনেট: আপনি কী করবেন?
১. ব্যান্ডউইথ খালি রাখুন
একসঙ্গে অনেক ডিভাইস কানেক্ট থাকলে গতি কমে যায়। দরকার হলে QoS (Quality of Service) সেটিংসে অগ্রাধিকার ঠিক করে দিন।
২. সিগনালের কাছে যান
রাউটার বা মডেমের কাছে গিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করুন। দেয়াল বা জানালার পাশে রাউটার রাখলে সিগন্যাল দুর্বল হয়।
৩. রিস্টার্ট দিন
মডেম বা রাউটার ১ মিনিট বন্ধ রেখে আবার চালু দিন। অনেক ক্ষেত্রে এটা দ্রুত সমাধান আনে।
৪. ২.৪GHz ব্যান্ড ব্যবহার করুন
রাউটার যদি ডুয়াল ব্যান্ড হয়, তবে বৃষ্টির দিনে ২.৪GHz ব্যান্ড বেছে নিন। এটি দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ভালো কাজ করে।
৫. মেশ ওয়াই-ফাই ব্যবহার করুন
বড় বাসা বা একাধিক তলায় ইন্টারনেট স্পিড ঠিক রাখতে Mesh Wi-Fi System ভালো সমাধান হতে পারে।
বৃষ্টির দিনে ইন্টারনেট ধীর হয়ে যাওয়াটা প্রকৃতিগতভাবেই কিছুটা স্বাভাবিক। তবে আপনি যদি জানেন আপনার ইন্টারনেট কীভাবে কাজ করে, আর কীভাবে ছোটখাটো পরিবর্তনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়—তাহলে ইন্টারনেটের ‘বর্ষাকালীন মুড’ আপনাকে আর ভোগাবে না।
নুসরাত