
জাতীয় ফল কাঁঠাল শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিগুণেও অতুলনীয়। এর সুস্বাদু বিচিও কম নয় কোনো অংশে। কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান ও ঔষধিগুণ, যা শুধু শরীরের প্রয়োজন মেটায় না, অনেক অসুখেরও প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এমনকি আলুর ঘাটতি পূরণেও এটি হতে পারে একটি কার্যকর বিকল্প।
কাঁঠালের বিচির পুষ্টিমানের দিকে তাকালে যা জানা যায়:
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে—
-
শক্তি: ৯৮ ক্যালরি
-
কার্বোহাইড্রেট: ৩৮.৪ গ্রাম
-
প্রোটিন: ৬.৬ গ্রাম
-
ফাইবার: ১.৫ গ্রাম
-
চর্বি: ০.৪ গ্রাম
-
ক্যালসিয়াম: ০.৫৫ মিলিগ্রাম
-
আয়রন: ১.২ মিলিগ্রাম
-
সোডিয়াম: ২ মিলিগ্রাম
-
পটাশিয়াম: ৪.০৭ মিলিগ্রাম
-
ভিটামিন বি১, বি১২, এ ও সি ছাড়াও এতে রয়েছে থায়ামিন, নায়াসিন এবং গুরুত্বপূর্ণ ফাইটো-ক্যামিক্যাল যেমন লিগন্যান, আইসোফ্ল্যাভোন, স্যাপোনিন।
বিচির স্বাস্থ্য উপকারিতা:
১. এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে ও বার্ধক্যের প্রভাব কমায়।
২. কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকায় ওজন না বাড়িয়েই শক্তি জোগায়।
৩. খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়।
৪. ভিটামিন এ-এর কারণে চোখের জন্য উপকারী, রাতকানা প্রতিরোধ করে।
৫. বলিরেখা দূর করে ত্বক উজ্জ্বল করে।
৬. উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ হওয়ায় আমিষের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে যারা মাছ-মাংস কম খান।
৭. এতে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধক উপাদান যা এইডস রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর।
৮. পটাশিয়াম রক্তচাপ ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
বিচির ঔষধিগুণ:
-
হজম ক্ষমতা ও বিপাকক্রিয়া বাড়ায়
-
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
-
মানসিক প্রশান্তি দেয়
-
নার্ভাসনেস কমায়
-
রক্তশূন্যতা দূর করে
-
থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখে
-
দাঁতের মাড়ি শক্তিশালী করে
-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
-
সর্দি-কাশির সংক্রমণ রোধ করে
আলুর বিকল্প হিসেবে বিচি:
বিচিকে আলুর বিকল্প হিসেবে তরকারি, ভর্তা বা ভাজি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে যেমন পুষ্টি পাওয়া যায়, তেমনি আলুর চেয়ে কম ক্যালরিতে বেশি প্রোটিন ও আঁশ পাওয়া সম্ভব। দেশের অনেক অঞ্চলে আলুর ঘাটতির প্রেক্ষাপটে কাঁঠালের বিচির যথাযথ ব্যবহার হতে পারে এক বিকল্প সমাধান।
বিচি ভালোভাবে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করলে সারা বছরই ব্যবহারযোগ্য হয়। এটি শুধু খাবার নয়, প্রাকৃতিক এক ‘হেলদি মেডিসিন’-ও বটে।
নুসরাত