
ছবি: সংগৃহীত
কফি শুধু সকালে ঘুম ভাঙানোর জন্য নয়—এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও অকালমৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে পারে। কিন্তু কফিতে কী যোগ করছেন, তার ওপর নির্ভর করছে আপনি এই উপকার পাচ্ছেন কি না—নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
কী বলছে গবেষণা?
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬,০০০ প্রাপ্তবয়স্ককে প্রায় ১০ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে:
- দিনে ১-২ কাপ কফি পান করলে মৃত্যুঝুঁকি ১৪% কমে।
- দিনে ২-৩ কাপ কফি খেলে মৃত্যুঝুঁকি ১৭% পর্যন্ত কমে।
- কফি পানকারীরা হৃদরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকিও ২৯–৩৩% কমিয়ে আনতে সক্ষম হন।
তবে এই উপকার শুধু তখনই প্রযোজ্য, যখন কফি কালো অবস্থায় বা খুব অল্প চিনি-দুধ-ক্রিম দিয়ে খাওয়া হয়। বেশি চিনি বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট কফির উপকারিতা নষ্ট করে দিতে পারে।
গবেষক ফাং ফাং ঝাং বলেন, “কফিতে বেশি চিনি বা চর্বি যোগ করলে আমাদের মোট ক্যালোরি গ্রহণ বাড়ে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।”
কতটুকু চিনি-দুধ নিরাপদ?
গবেষণায় ‘কম যোগ’ বলতে বোঝানো হয়েছে:
চিনি ২.৫ গ্রামের (প্রায় আধা চা-চামচ) নিচে,
ফ্যাট ১ গ্রামের নিচে (যেমন ৫ চামচ ২% দুধ বা ১ চামচ হাফ-অ্যান্ড-হাফ)।
এর বেশি চিনি বা দুধ মেশালে কফির মৃত্যুঝুঁকি কমানোর ক্ষমতা হারিয়ে যায়।
ক্যান্সার ঝুঁকির সাথে সম্পর্ক নেই
গবেষণায় দেখা যায়নি যে কফি ক্যান্সারজনিত মৃত্যুঝুঁকি কমায়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা সীমিত ছিল এবং নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সার বিশ্লেষণ করা হয়নি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন
গবেষকরা বলছেন, কফিতে থাকা পলিফেনল নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহে প্রদাহ কমিয়ে কোষকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, যা মৃত্যুঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে। তবে কফিতে চিনি-চর্বি যোগ করলে এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নষ্ট না হলেও, চিনি-চর্বির অতিরিক্ত গ্রহণ স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।
কীভাবে কফির উপকার পাবেন?
গবেষকরা বলেন, প্রতিদিন ২ কাপের বেশি কফি না খাওয়াই ভালো। কারণ অতিরিক্ত কফি পান করলে অনিদ্রা, হৃদস্পন্দন অনিয়ম ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি তৈরি হয়।
গবেষণার সহ-লেখক জেমস ও’কিফ বলেন, “মধ্যম মাত্রায় কালো কফি পান করলে উপকার পাওয়া যায়। তবে বেশি চিনি ও দুধ যোগ করলে সেই উপকার ক্ষুণ্ণ হয়।”
কালো কফি বা অল্প চিনি-দুধের কফি মৃত্যুঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু অতিরিক্ত মিষ্টি বা ফ্যাট যোগ করলে কফির উপকারিতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর উপায়ে কফি পান করুন, সুস্থ থাকুন!
আঁখি