ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

১৯ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি তারেক রহমানের ভিত্তিপ্রস্তরকৃত হাসপাতাল

মাহফুজ মন্ডল, বগুড়া

প্রকাশিত: ১৫:০৪, ১ জুলাই ২০২৫

১৯ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি তারেক রহমানের ভিত্তিপ্রস্তরকৃত হাসপাতাল

ছবি: জনকন্ঠ

২০০৬ সালে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার কাগইল ইউনিয়নে ২০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান। কিন্তু দীর্ঘ ১৯ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি সেই হাসপাতালটি। স্থানীয়দের দাবি, এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে।

বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ শাসনামলে বারবার উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলেই অভিযোগ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। অনেকেই বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান ও বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত হওয়ায়, বগুড়াকে 'একঘরে' করে রাখা হয়েছিল দীর্ঘদিন।

এই হাসপাতালটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন তারেক রহমান, যাতে কাগইলসহ আশেপাশের প্রায় ১০টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ চিকিৎসা পেতে পারেন। কাগইল ইউনিয়ন উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় এখানকার মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। আশেপাশে কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায়, অসুস্থ রোগীদের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছানো এক দুঃসহ যাত্রা।

কাগইলের গৃহিণী খালেদা খানম আক্ষেপ করে বলেন, "আমাদের একটি হাসপাতাল না থাকার জন্যে অনেক সিরিয়াস রোগীদের বগুড়াতে নিয়ে যেতে যেতে মারা যায়। আমরা এখানে সরকারি ঔষধ পাই না। এই হাসপাতালটি হলে আমাদের কেউ আর মারা যাবে না। এটা সকলেরই স্বপ্ন।"

গাবতলী উপজেলা ও কাগইল ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরাও একই সুরে বলেন, "শুধু তারেক রহমানের নাম যুক্ত থাকায় হাসপাতালটি আর হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে এই অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।"

এ বিষয়ে বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. ফারজানুল ইসলাম বলেন, "প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাসপাতাল হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন না। বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। সরেজমিনে পরিদর্শনের পর আমরা প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠাবো, যাতে দ্রুত বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া যায়।"

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ১৯ বছর পরও কাঙ্ক্ষিত হাসপাতালটি শুধু একটি নামফলকে সীমাবদ্ধ। এই দীর্ঘ অনিশ্চয়তায় পড়ে থাকা জনগণ আজও অপেক্ষায় কবে তারা পাবে সেই প্রতীক্ষিত চিকিৎসাসেবা, যার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তারেক রহমান।

Mily

×