ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

টেলকম পাউডার ব্যবহারেই বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি!

প্রকাশিত: ১৪:২৩, ২১ মে ২০২৫

টেলকম পাউডার ব্যবহারেই বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি!

ছ‌বি: সংগৃহীত

ডিম্বাশয় ক্যান্সার ডিম্বাশয়ে শুরু হয় এবং প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত ধরা পড়ে না, ফলে এটি নারীদের মধ্যে অন্যতম গুরুতর ক্যান্সার হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি একটি নীরব ঘাতক, কারণ ফাঁপা ভাব, কোমরে ব্যথা, বারবার প্রস্রাবের মতো উপসর্গগুলো অনেক নারী উপেক্ষা করেন।

ভারতের মেডিকোভার হাসপাতালের খারঘরে কর্মরত কনসালটেন্ট মেডিকেল অনকোলজিস্ট ডঃ সলিল পাটকার এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ডিম্বাশয় ক্যান্সারের উপসর্গগুলো সাধারণত অস্পষ্ট এবং সহজে নজর এড়িয়ে যায়, যার কারণে শুরুতেই সনাক্তকরণ কঠিন হয়ে পড়ে। সাধারণত রোগটি তখনই লক্ষণীয় হয় যখন তা অনেকটা অগ্রসর হয়ে যায়।”

তিনি আরও বলেন, “ডিম্বাশয় ক্যান্সারের সঠিক কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে বয়স, জিনগত প্রবণতা ও হরমোনের পরিবর্তন এই রোগের ঝুঁকির কারণ হতে পারে। অনেক নারীর মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে এবং নানা ভুল ধারণা রয়েছে, যা তাদের সময়মতো চিকিৎসা নেয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এখন সময় এসেছে এসব ভুল ধারণা দূর করে নারীদের লজ্জা ও সংকোচ ভুলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করার আহ্বান জানানোর।”

মিথ ও সত্য

মিথ ১: ডিম্বাশয় ক্যান্সার নিরাময় অসম্ভব
সত্য: অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডিম্বাশয় ক্যান্সার পরবর্তী পর্যায়ে ধরা পড়ে, যা ফলাফল খারাপ হতে পারে। তবে রোগ শুরুতে শনাক্ত হলে এটি নিরাময় সম্ভব। প্রথম পর্যায়ের ক্যান্সারের জন্য বিভিন্ন চিকিৎসার অপশন রয়েছে এবং চিকিৎসক সঠিক পদ্ধতি নির্ধারণ করবেন।

মিথ ২: ডিম্বাশয় ক্যান্সার শুধুমাত্র বৃদ্ধ নারীদের হয়
সত্য: সাধারণ ধারণা হলো, এটি শুধুমাত্র ঊর্ধ্ববয়সী নারীদের রোগ, কারণ বেশি দেখা যায় পোষ্ট-মেনোপজিকাল নারীদের মধ্যে। তবে ডিম্বাশয় ক্যান্সার যে কোনো বয়সেই হতে পারে, এমনকি ৩০-৪০ বছর বয়সী নারীর মধ্যেও।

মিথ ৩: প্যাপ স্মিয়ার ডিম্বাশয় ক্যান্সার শনাক্ত করে
সত্য: প্যাপ স্মিয়ার ডিম্বাশয় ক্যান্সার শনাক্ত করে না এবং এটি সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য ব্যবহৃত হয়। ডিম্বাশয় ক্যান্সারের জন্য বর্তমানে কার্যকর কোনো স্ক্রিনিং টেস্ট নেই। তবে অনকোলজিস্টের পরামর্শে ট্রান্সভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ড এবং CA-125 ব্লাড টেস্ট করা হতে পারে।

মিথ ৪: ডিম্বাশয় ক্যান্সার শুধুমাত্র যাদের পরিবারে ইতিহাস রয়েছে তাদের হয়
সত্য: পরিবারে ডিম্বাশয় ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি বাড়ে ঠিকই, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরিবারের ইতিহাস ছাড়া নারীরাই এই রোগে আক্রান্ত হন। বয়স, হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি ব্যবহার এবং কিছু জেনেটিক কারণও ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

মিথ ৫: টেলকম পাউডার ব্যবহারে ডিম্বাশয় ক্যান্সার হয়
সত্য: ধারণা করা হয় যে, যেসব নারী টেলকম পাউডার ব্যবহার করেন জেনিটাল এলাকায়, সেই পাউডারের কণাগুলো প্রজনন পথ দিয়ে ডিম্বাশয়ে পৌঁছে যেতে পারে এবং সেখানে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা সময়ের সঙ্গে ডিম্বাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

মিথ ৬: যেসব নারীর হিস্টেরেকটমি হয় তাদের ডিম্বাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়
সত্য: গর্ভাশয় অপসারণ (হিস্টেরেকটমি) করলে ডিম্বাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়, কিন্তু পুরোপুরি শেষ হয় না। ডিম্বাশয় অপসারণ করলে ঝুঁকি আরও কমে, তবে ডিম্বাশয় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
 

সূত্র: https://www.hindustantimes.com/lifestyle/health/talcum-powder-usage-can-cause-ovarian-cancer-doctor-shares-6-facts-about-the-disease-101747752667526.html

এএইচএ

×