
ছবি: প্রতীকী
বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৬ কোটি মানুষ অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগে ভুগছেন, যা দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসযন্ত্রজনিত রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ু দূষণ, অপর্যাপ্ত নগরপরিকল্পনা ও চরম তাপমাত্রার সম্মিলিত প্রভাব একজন মানুষের সারাজীবনের অ্যাজমা ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
গবেষকরা দীর্ঘদিন ধরেই জানতেন যে পরিবেশগত উপাদান যেমন বায়ু দূষণ ও সবুজ এলাকার ঘাটতি অ্যাজমার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তবে এইসব উপাদান সম্মিলিতভাবে কীভাবে প্রভাব ফেলে, তা এতদিন স্পষ্ট ছিল না।
গবেষণায় ইউরোপের ১৪টি কোর্টের ৩,৪৯,০৩৭ জন অংশগ্রহণকারীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। বয়সের পরিসীমা ছিল জন্ম থেকে ৭০ বছর পর্যন্ত। অংশগ্রহণকারীদের বাড়ির ঠিকানার ভিত্তিতে তিনটি প্রধান পরিবেশগত উপাদানের—বায়ু দূষণ, নগর কাঠামো ও আশপাশের তাপমাত্রা—উন্মুক্ততা মূল্যায়ন করা হয়।
ফলাফল অনুযায়ী, উচ্চমাত্রার বায়ু দূষণের এলাকায় বসবাসকারী প্রাপ্তবয়স্কদের অ্যাজমা ঝুঁকি ১৩% ও শিশুদের ১৮% বেশি। সবুজ এলাকার ঘাটতি প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ১৫% ও শিশুদের ক্ষেত্রে ৩৮% অ্যাজমা ঝুঁকি বাড়ায়।
সবচেয়ে বিপজ্জনক শহুরে এলাকা হলো যেখানে বায়ু দূষণ বেশি, সবুজ কম এবং পিচ-কংক্রিটে ঘেরা পরিকাঠামো বিদ্যমান। সেখানে প্রাপ্তবয়স্কদের অ্যাজমার ঝুঁকি ২৭% এবং শিশুদের ৩৫% পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এমনকি যেখানে দূষণ কম, তবুও সবুজহীন ও কংক্রিটে ঘেরা এলাকা অ্যাজমা ঝুঁকি ৩৬% পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
গবেষণার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এই প্রথম শহুরে পরিবেশের সম্মিলিত প্রভাব শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের অ্যাজমা শুরুর ঘটনায় বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ফলাফল অনুযায়ী, শহুরে পরিবেশের কারণে প্রায় ১২% অ্যাজমা ঘটনা সরাসরি তৈরি হয়।
গবেষকেরা বলছেন, বায়ু দূষণ কমানো, সবুজ এলাকা বাড়ানো এবং চরম আবহাওয়া সামাল দেওয়ার উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমেই শহরগুলো স্বাস্থ্যবান ও অ্যাজমা-মুক্ত রাখা সম্ভব।
শহীদ