ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে চীনা ইনভার্টারে ‘কিল সুইচ’: জাতীয় গ্রিড নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি!

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৯ মে ২০২৫; আপডেট: ০৫:৪৫, ১৯ মে ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে চীনা ইনভার্টারে ‘কিল সুইচ’: জাতীয় গ্রিড নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি!

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত চীনা নির্মিত পাওয়ার ইনভার্টারে ‘গোপন কিল সুইচ’ বা নিয়ন্ত্রিত যোগাযোগ যন্ত্র খুঁজে পেয়েছেন মার্কিন বিশেষজ্ঞরা। এই ইনভার্টারগুলোর মধ্যে লুকানো সেলুলার রেডিওসহ এমন কিছু ডিভাইস পাওয়া গেছে, যেগুলোর মাধ্যমে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় ঘটানো যেতে পারে।

চীনা নির্মিত সৌর বিদ্যুৎ ইনভার্টারে অজানা ও গোপন যোগাযোগ যন্ত্রের সন্ধান পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি কর্মকর্তারা নবায়নযোগ্য শক্তি অবকাঠামোর নিরাপত্তা পুনর্মূল্যায়ন শুরু করেছেন। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত দুই ব্যক্তি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এসব নিশ্চিত করেছেন।

সৌর প্যানেল ও বায়ু বিদ্যুৎ টারবাইন থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ গ্রিডে সংযুক্ত করতে যে ইনভার্টার ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর অধিকাংশই চীনে তৈরি। একই ধরনের ইনভার্টার ব্যবহার করা হয় ব্যাটারি, হিট পাম্প এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের চার্জারেও।

যদিও ইনভার্টারে সফটওয়্যার আপডেট ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণের সুযোগ রাখা হয়, তবু বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো সাধারণত ফায়ারওয়াল ব্যবহার করে চীনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রোধ করে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন ইনভার্টার খুলে পরীক্ষা করে এমন কিছু যোগাযোগ যন্ত্র খুঁজে পেয়েছেন, যেগুলোর উল্লেখ পণ্যের নথিতে ছিল না। এই যন্ত্রগুলোর মাধ্যমে ইনভার্টারে নতুন একটি ‘গোপন’ যোগাযোগ চ্যানেল তৈরি হয়, যা দূর থেকে ফায়ারওয়াল এড়িয়ে যেতে পারে — যা জাতীয় গ্রিডের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

গত নয় মাসে, একই ধরনের ‘অজানা’ সেলুলার রেডিওসহ যোগাযোগ যন্ত্র কিছু চীনা ব্যাটারিতেও খুঁজে পাওয়া গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা। ঠিক কত সংখ্যক ইনভার্টার ও ব্যাটারি পরীক্ষা করা হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করে চীন চাইলে গ্রিড থেকে ইনভার্টার বন্ধ করে দিতে পারে, অথবা সেটিংস পরিবর্তন করে গ্রিডকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (NSA) সাবেক পরিচালক মাইক রজার্স জানান, ‘চীন বিশ্বাস করে আমাদের মৌলিক অবকাঠামোর কিছু অংশ ধ্বংস বা বিঘ্নিত করার ক্ষমতা রাখলে তা কৌশলগতভাবে লাভজনক।’ তার মতে, ইনভার্টারের ব্যাপক ব্যবহার পশ্চিমা বিশ্বকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সীমিত করে ফেলছে।

তবে চীনা দূতাবাসের এক মুখপাত্র এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার ধারণাকে অযথা বিস্তৃত করে চীনের অবকাঠামোগত অগ্রগতিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করার আমরা তীব্র বিরোধিতা করি।’

এখন পর্যন্ত কোন কোন চীনা কোম্পানি এসব ইনভার্টার ও ব্যাটারি সরবরাহ করেছে, তা প্রকাশ করা হয়নি। একইসঙ্গে, ঠিক কত সংখ্যক ডিভাইসে এই ধরনের যন্ত্রাংশ পাওয়া গেছে — তাও সরকারিভাবে জানানো হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র সরকার এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

 

সূত্র: রয়টার্স, দ্য সানডে টাইমস

রাকিব

×