ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইউনূসের চমক! এবার যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কছাড়ে পণ্য যাবে বাংলাদেশ থেকে !

প্রকাশিত: ০৮:০১, ১৯ মে ২০২৫

ইউনূসের চমক! এবার যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কছাড়ে পণ্য যাবে বাংলাদেশ থেকে !

ছবি : সংগৃহীত

ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক টেবিলে ভেসে উঠেছে এক নতুন বার্তা। আর ঢাকায় যেন সেই প্রতিধ্বনিতেই জেগে উঠেছে সম্ভাবনার জোয়ার। বহু বছরের প্রতীক্ষা ও অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র সম্মত হয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসতে। এটি শুধু একটি নতুন বোঝাপড়ার সূচনা নয়, বরং রপ্তানিনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য হতে পারে এক ঐতিহাসিক মোড় ঘোরানোর মুহূর্ত।

 

 

ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সম্ভাব্য এই চুক্তি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হবে। বিশাল মার্কিন বাজারে এতে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবাহে নতুন গতি আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১৩ সালের আগে পর্যন্ত স্বল্পোন্নত দেশের (LDC) সুবিধাভোগী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেত। তবে, এই তালিকায় ছিল না দেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য, তৈরি পোশাক। ফলে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রপ্তানিতে গড়ে ১৫.৫০ শতাংশ শুল্ক দিতে হতো। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে, যখন বাংলাদেশি পণ্যে অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও ঢাকার অনুরোধে বর্তমানে তা তিন মাসের জন্য স্থগিত রয়েছে।

 

 

গত মাসে ওয়াশিংটনে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (USTR) দপ্তরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করে। বৈঠকে বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেয়, যার প্রেক্ষিতে ইউএসটিআর বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি চুক্তির খসড়া চেয়ে পাঠিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য। সেখানে দেশের মোট রপ্তানির ১৭.০৯ শতাংশ এবং তৈরি পোশাক রপ্তানির ১৮ শতাংশের বেশি যায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট ওভেন পোশাকের প্রায় ২৬ শতাংশ, নিটওয়্যারের ১১.৭১ শতাংশ এবং হোম টেক্সটাইল পণ্যের ১৬.১২ শতাংশ রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে।

 

 

বর্তমানে বিদ্যমান শুল্ক কাঠামোয় রয়েছে বড় বৈষম্য। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়, যেখানে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যে গড় শুল্ক হার মাত্র ৬.১ শতাংশ। বাংলাদেশ মূলত যুক্তরাষ্ট্র থেকে কাঁচাতোলা ও স্ক্র্যাপ লোহা আমদানি করে, যেগুলোর উপর শুল্ক হার যথাক্রমে ০ শতাংশ ও ১ শতাংশ।

এই শুল্কবৈষম্য দূর করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও লাভজনক বাণিজ্য কাঠামো গড়ে তুলতে এই সম্ভাব্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে বাংলাদেশের জন্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
 

আঁখি

×