
প্রতীকী ছবি
বর্তমান শিক্ষাজীবনে সময়ের গুরুত্ব আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। একদিকে ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, পরীক্ষা অন্যদিকে ব্যক্তিগত জীবন, সামাজিক ও পারিবারিক চাপ; সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য সময় ব্যবস্থাপনা এখন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে, একদল শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শে শিক্ষার্থীদের জন্য ১০টি সময় ব্যবস্থাপনা কৌশল সামনে এসেছে, যা তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াতে ও মানসিক চাপ কমাতে কার্যকর বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
মনোযোগ নষ্টকারী বিষয় এড়িয়ে চলা:
অপ্রয়োজনীয় মোবাইল ব্যবহার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, গেমস ইত্যাদি পড়াশোনার সময় দূরে রাখা উচিত। শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নিরিবিলি ও মনোযোগপূর্ণ পরিবেশে অধ্যয়ন করতে।
প্রতিদিনের রুটিন তৈরি:
দিনের শুরুতেই একটি রুটিন বানিয়ে নেওয়া ছাত্রছাত্রীদের সময় নষ্ট না করে সঠিক কাজটিতে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে।
অতিরিক্ত দায়িত্ব না নেওয়া:
শিক্ষার্থীদের শেখানো হচ্ছে ‘না’ বলতে। অনেক সময় সামাজিক চাপের কারণে একাধিক কাজে জড়িয়ে পড়া হয়, যা মূল পড়াশোনার ক্ষতি করে।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ নির্বাচন:
প্রথমে জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন করার অভ্যাস গড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে করে সময় অপচয় কমে এবং কাজের মান বাড়ে।
স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ:
স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও উৎসাহ বৃদ্ধি করে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
ক্যালেন্ডার বা ডায়েরি ব্যবহার:
পরীক্ষা, প্রজেক্ট, ক্লাস টেস্ট ইত্যাদির তারিখ আগেভাগে লিখে রাখলে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে এবং সময়মতো প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
একসঙ্গে একাধিক কাজ না করা:
একসাথে অনেক কাজ করার চেষ্টা করলে ফলাফল খারাপ হতে পারে। বরং একসময় একটিই কাজ করার অভ্যাস গড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বড় কাজ ছোট অংশে ভাগ করা:
প্রজেক্ট বা অ্যাসাইনমেন্টের মতো বড় কাজগুলোকে ছোট ছোট ধাপে ভাগ করলে তা সহজে শেষ করা সম্ভব হয়।
বিরতি নেওয়ার অভ্যাস গড়া:
অবিরত পড়াশোনার বদলে ২৫-৩০ মিনিট পড়ে ৫ মিনিটের বিরতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে করে মানসিক ক্লান্তি কমে এবং মস্তিষ্ক সতেজ থাকে।
সময় ভাগ করে কাজ নির্ধারণ:
দিনের নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট কাজে বরাদ্দ দিলে সময় অপচয় কমে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৃঙ্খলা আসে।
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সময় ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়ে থাকে। অভিভাবকরাও বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন।
সবশেষে বলা যায় সময় ব্যবস্থাপনা এখন আর শুধু কর্পোরেট জগতে প্রয়োজনীয় নয়। শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রতিটি ধাপেও এর গুরুত্ব ক্রমেই বাড়ছে। সঠিক কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে ভবিষ্যতের সফলতা অনেকটাই নিশ্চিত করা সম্ভব এমনটাই মত শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের।
নোভা