
ছবি: সংগৃহীত
নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষের অ্যালকোহল ব্যবহারে আসক্ত হওয়ার জেনেটিক ঝুঁকি বেশি, তাদের মস্তিষ্কের ইমিউন কোষ—বিশেষ করে মাইক্রোগ্লিয়া—অ্যালকোহলের প্রতি অতিপ্রতিক্রিয়া দেখায়। যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই তথ্য প্রকাশ করেছেন সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে, যা Science Advances সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণায় গবেষকরা মানব-উৎপন্ন কোষের মডেল ব্যবহার করে দেখেছেন, যাদের জেনেটিক ঝুঁকি বেশি, তাদের মাইক্রোগ্লিয়া কোষ অ্যালকোহল সংস্পর্শে এসে অস্বাভাবিক এবং অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায়। এই আবিষ্কার অ্যালকোহল নির্ভরতার জৈবিক ভিত্তি অনুধাবনে নতুন দরজা খুলে দিয়েছে।
গবেষণার প্রধান লেখক, অধ্যাপক ঝিপিং পাং বলেন, “অ্যালকোহল ব্যবহারে আসক্তি হওয়ার পেছনে জিনগত প্রভাব অনেক বেশি। তবে সেই জেনেটিক ঝুঁকি কীভাবে মস্তিষ্কের কোষ ও মালিকুলার স্তরে প্রতিফলিত হয়, তা এতদিন পরিষ্কার ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, “মাইক্রোগ্লিয়া কোষগুলো মস্তিষ্কের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ, এবং এগুলো অ্যালকোহল বা অন্যান্য আঘাতে মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমরা দেখতে চেয়েছি—অ্যালকোহল ব্যবহারে জেনেটিক ঝুঁকি মাইক্রোগ্লিয়া কোষের আচরণকে কীভাবে প্রভাবিত করে।”
এই গবেষণায় প্রথমবারের মতো মানব-উৎপন্ন মডেলে মাইক্রোগ্লিয়া কোষের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করা হয়, যা আগের পশু-ভিত্তিক গবেষণার সীমাবদ্ধতা দূর করেছে। এতে দেখা যায়, উচ্চ ঝুঁকির ব্যক্তিদের কোষগুলো অ্যালকোহলের উপস্থিতিতে অতিরিক্ত প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা দীর্ঘমেয়াদে স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে এবং আসক্তির ঝুঁকি বাড়ায়।
গবেষকরা বলছেন, এই আবিষ্কার অ্যালকোহল ব্যবহারে আসক্তি প্রতিরোধে নতুন থেরাপি বা ওষুধ আবিষ্কারে সহায়ক হতে পারে। বিশেষ করে, জেনেটিক প্রোফাইলের ভিত্তিতে ব্যক্তির মস্তিষ্কের ইমিউন প্রতিক্রিয়া বুঝে নেওয়া যাবে, যা ব্যক্তি অনুযায়ী চিকিৎসা নির্ধারণে সহায়ক হবে।
ফারুক