ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মোঃ সাখাওয়াত হোসেন

একজন অগ্রসর নারীর প্রতিকৃতি

প্রকাশিত: ০০:১৬, ১৭ মে ২০২২

একজন অগ্রসর নারীর প্রতিকৃতি

তিনি বাংলাদেশ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করেছেন। দায়িত্ব পালন করছেন বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নকে প্রতিষ্ঠিত করার তাগিদে কাজ করে চলেছেন নিরবধি। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও পরিবার কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সেভ দ্য উইম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা। সেলিনা এডুকেশন এন্ড কালচারাল সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বাংলা একাডেমির সদস্য। ড. সেলিনা রশিদ, ভালুকা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। একজন আলোকিত মানুষ হিসেবে সমাজে অগ্রসর হওয়ার বাসনায় লিপ্ত নারীদের নিকট তিনি আদর্শের বাতিঘর হিসেবে প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণা দিয়ে চলেছেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, তাঁর বাবা সন্মুখ সমরে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশের জন্য জীবন দান করেছেন। তিনি তাঁর বাবার স্মৃতিকে খুঁজে ফেরেন সর্বত্র, সংগ্রহ করেছেন দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বধ্যভূমির মাটি। তিনি মনে করেন, এসব মাটির কোথাও না কোথাও তাঁর বাবার নিথর দেহের নমুনা রয়েছে। যুদ্ধশিশুদের জীবন ও বড় হওয়ার বিষয়টি তিনি খুব ভাবেন এবং উপযুক্ত প্লাটফরম পেলেও বিশেষ করে যুদ্ধে বাবা হারানোদের কথা তিনি বলেন। তাঁর স্বামী একটি এনজিওর নির্বাহী পরিচালক এবং তিনি চার পুত্র সন্তানের জননী। রাজনীতিতেও বেশ মুন্সিয়ানার ছাপ দেখিয়েছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সম্মানিত সদস্য এবং বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তাঁর জীবনের সব কিছু যে খুব সহজেই পেয়েছেন বিষয়টি এমন নয়। এ পথ মাড়াতে তাকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে, ক্ষমতাবানদের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে তিনি আজ এ পথে শামিল হয়েছেন। নারী হিসেবে অনেকের কটাক্ষকে সহ্য করতে হয়েছে তাই তো তিনি উচ্চতর পর্যায়ে গবেষণা করেছেন নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে। তিনি মনে করেন, উপযুক্ত সুযোগ, স্বাধীনতা ও অনুপ্রেরণা পেলে যে কোন নারী সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনতে পারে। নারীদের নানাভাবে সম্মানিত করতে ভালবাসেন, বিভিন্ন পর্যায়ে যারা সাফল্য পেয়েছেন তাদের পুরস্কার প্রদান করে সম্মানিত করেন। বিশেষ করে স্কুল, কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ে সাফল্য পাওয়া শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পুরস্কার প্রদান করে থাকেন। তাঁর কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ নানাবিধ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ চাষী মেয়ে, বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা, জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ পল্লী উন্নয়ন পদক, জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ সমবায়ীসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। এ পুরস্কারই তাঁকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করে, অনুপ্রেরণা প্রদান করে এবং অন্য নারীদের উৎসাহিত করার ক্ষেত্রেও তিনি ভূমিকা রেখে চলেছেন। এ ছাড়াও তিনি স্থানীয়ভাবে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। সাধ্যমতো বিভিন্ন পর্যায়ে যারা অসহায় তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন, বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে অসহায় কৃষকদের সহায়তা প্রদান ছাড়াও বিধবাপল্লীতে মানবিক সহায়তা প্রদান করেছেন। এ ছাড়াও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা অসচ্ছল তাদের আর্থিক সহায়তা দিতে কার্পণ্য করেন না। ড. সেলিনা রশিদ সময় পেলেই লেখালেখি শুরু করেন। লেখক হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত সংগঠন থেকে তিনি সম্মাননা পেয়েছেন। নারীদের জীবনমান ও সমাজে নারীর অবস্থান নিয়ে গ্রন্থ রচনা করেছেন। নারীর ক্ষমতায়নের ওপর জোর দিয়ে ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিকভাবে কর্মকা- পরিচালনা করে চলেছেন। তিনি মনে প্রাণে বিশ^াস করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে নারীর ক্ষমতায়নকে কাগজে কলমে পুঞ্জীভূত না করে বাস্তবে তাদের সুযোগ প্রদানে দেশ গঠনের অংশীদার হওয়ার উপযুক্ত হিসেবে তৈরি করবে রাষ্ট্র।
×