ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার সাবেক আইজিপি মামুনের, রাজসাক্ষী হচ্ছেন

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার বিচার শুরু

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২৪, ১১ জুলাই ২০২৫

মানবতাবিরোধী অপরাধের  মামলায় শেখ হাসিনার বিচার শুরু

.

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ  আল-মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন এর মধ্য দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে  বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল- এর মধ্যে  শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক রয়েছেন অন্যদিকে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল- বৃহস্পতিবার আদেশ প্রদান করেন  ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা আসাদুজ্জামান খান কামালের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ   বিচারক মো. মোহিতুল হক  এনাম  চৌধুরী

সময় চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ প্রসিকিউশন টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন আর পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন এদিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করেছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনআমি স্বেচ্ছায় মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত আমার জ্ঞানের মধ্যে থাকা সমস্ত পরিস্থিতির সত্য এবং বিস্তারিত প্রকাশ করতে ইচ্ছুকতিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি জুলাই-আগস্টের আন্দোলন চলাকালে যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত বিবরণ আমি আদালতে তুলে ধরতে চাই রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাইআইনজীবীরা বলেন, কোনো আসামি ধরনের স্বীকারোক্তি দিলে তাকে রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচনা করা হয় সেই হিসেবে সাবেক আইজিপিকে মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে ধরা হচ্ছে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের আদেশের মধ্য দিয়ে চব্বিশের মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রথমবারের মতো শেখ হাসিনাসহ মামলার অপর আসামিদের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো সেই সঙ্গে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য (ওপেনিং স্টেটমেন্ট) আগস্ট এবং মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য আগস্ট দিন রেখেছে আদালত আন্দোলন দমনে ১৪০০ জনকে হত্যার উস্কানি, প্ররোচনা নির্দেশ দান, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবলিটিএবংজয়েন্ট  ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজেরমোট অভিযোগ আনা হয়েছে তিন আসামির বিরুদ্ধে এর পক্ষে আন্দোলনকারীদের ওপর মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া সংক্রান্ত শেখ হাসিনার অডিও টেপ এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন

গত জুলাই অভিযোগ গঠনের আবেদন জানান চিফ প্রসিকিউটর ওই দিন তিনি শুনানিতে বলেন, ‘ৎকালীন আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিভিন্ন বাহিনী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সশস্ত্র ক্যাডারদের আক্রমণে আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা গ্রহণে বাধা প্রদান করা হয় চিকিৎসা সহায়তায় বাধাগ্রস্তের জন্য অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেওয়া, হাসপাতাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীদের তথ্য সংগ্রহ করা, রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় এবং চিকিৎসা প্রদানকারী কর্মীদের ভয় দেখানো হয় ডিজিএফআই, এনএসআইসহ গোয়েন্দা নিরাপত্তা সংস্থাগুলো হাসপাতালগুলোতে অভিযান চালিয়ে মেডিক্যাল রেকর্ড জব্দ করে এবং চিকিৎসা প্রদানকারী কর্মীদের মিথ্যা রিপোর্ট তৈরি করতে বা চিকিৎসা প্রদানে অস্বীকার করতে চাপ দেয় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত করার ফলে আহতদের জখম গুরুতর আকার ধারণ করে এবং অনেক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘২০২৪ সালের আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বিভীষিকাময় দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার পতনের দিনে যখন লাখো জনতামার্চ টু ঢাকাআন্দোলনের মাধ্যমে রাস্তায় নেমে আসে, তখন সরকারের দমন-পীড়নের নিষ্ঠুরতা চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছায় সকাল থেকেই সেনাবাহিনী জানত শেখ হাসিনার শাসনের অবসান ঘটেছে কিন্তু হাসিনার অনুগত পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্য প্রাণপণে গণবিপ্লব রুখে দেওয়ার চেষ্টা করে শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথে কেন্দ্রস্থলে পুলিশের আর্মড ইউনিট আনসার সদস্যরা ছাত্র সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে নির্বিচারে প্রাণঘাতী রাইফেল শটগানের গুলি ছোড়ে

রাজসাক্ষী হচ্ছেন মামুন ট্রাইব্যুনালে নিজের দোষ স্বীকার করেন সাবেক আইজিপি মামুন আদালতে সাবেক আইজিপি মামুন বলেন, ‘আমি স্বেচ্ছায় মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত আমার জ্ঞানের মধ্যে থাকা সমস্ত পরিস্থিতির সত্য এবং বিস্তারিত প্রকাশ করতে ইচ্ছুকতিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি জুলাই-আগস্টের আন্দোলন চলাকালে যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত বিবরণ আমি আদালতে তুলে ধরতে চাই রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাইআইনজীবীরা বলেন, কোনো আসামি ধরনের স্বীকারোক্তি দিলে তাকে রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচনা করা হয় সেই হিসেবে সাবেক আইজিপিকে মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে ধরা হচ্ছে এদিকে দোষ স্বীকারের পর মামুনকে পৃথক সেলে রাখা এবং নিরাপত্তা দিতে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ পরে আদালত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন

আদেশের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামুন বলেছেন, তিনি একজন সাক্ষী হিসেবে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের যে সব ঘটনা ঘটেছে সমস্ত কিছু জানবার কথা তিনি সমস্ত তথ্য আদালতকে উদ্ঘাটনের ব্যাপারে এপ্রোভার হতে চেয়েছেন সেই প্রার্থনা আদালত মঞ্জুর করেছেন সুতরাং তিনি পরবর্তী সময়ে আদালতের সুবিধাজনক সময়ে তার বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে আদালতকে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে সাহায্য করবেন এতে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে গণ্য হবেন

কি আছে অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগের বিচার আজ শুরু হয়েছে, তা নিচে উল্লেখ  করা হলো

অভিযোগ- : ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৎকালীন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা সম্পৃক্ততায় তাদের অধীনস্থ নিয়ন্ত্রণাধীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক ব্যাপক মাত্রায়, পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ, নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ হত্যা, হত্যার চেষ্টা, নির্যাতন এবং অন্যান্য অমানবিক আচরণের অপরাধসমূহ সংঘটনের প্ররোচনা, উস্কানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, অপরাধ সংঘটন প্রতিরোধে ব্যর্থতা, অপরাধ সংঘটনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদান  না করা এবং ষড়যন্ত্র করার অপরাধ; যা আসামিদের জ্ঞাতসারে সংঘটিত

অভিযোগ- : শেখ হাসিনা কর্তৃক ছাত্র-জনতার ওপর হেলিকপ্টার, ড্রোন প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ এবং ৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন কর্তৃক শেখ হাসিনার উক্ত নির্দেশ বাস্তবায়নে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং অধীনস্থ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা দিয়ে কার্যকর করার মাধ্যমে অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ প্রদান, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছে; যা তাদের জ্ঞাতসারে কার্যকর করা হয়েছে

অভিযোগ- : শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান কামাল চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা সম্পৃক্ততায় ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে স্বল্প দূরত্ব থেকে সরাসরি নিরীহ-নিরস্ত্র আন্দোলনকারী ছাত্র আবু সাঈদের বুক লক্ষ্য করে বিনা উস্কানিতে একাধিক গুলি চালিয়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা আসামিদের জ্ঞাতসারে এবং তাদের কর্তৃক অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ, প্ররোচনা, উস্কানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্রসহ অন্যান্য অমানবিক আচরণ করার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন

অভিযোগ- : শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা সম্পৃক্ততায় ২০২৪ সালের আগস্ট ঢাকা মহানগরীর চাঁনখারপুল এলাকায় আন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর ৎকালীন সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কর্তৃক নিরীহ-নিরস্ত্র ছয়জনকে গুলি করে হত্যা উল্লিখিত আসামিদের জ্ঞাতসারে এবং তাদের কর্তৃক হত্যার নির্দেশ, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্র করার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন

অভিযোগ- : শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা সম্পৃক্ততায় ২০২৪ সালের আগস্ট ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার সামনে এবং আশপাশ এলাকায় আন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর ৎকালীন সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কর্তৃক নিরীহ-নিরস্ত্র ছয়জনকে গুলি করে তাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃতদেহ এবং একজনকে জীবিত গুরুতর আহত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার অপরাধ; যা আসামিদের জ্ঞাতসারে সংঘটিত হয়েছে উক্তরূপ হত্যার নির্দেশ, প্ররোচনা, উস্কানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্রসহ অন্যান্য অমানবিক আচরণের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন

এই বিচার অতীতের প্রতিশোধ নয় চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম গত জুন তাঁর সূচনা বক্তব্যে বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের নারকীয় বীভৎসতা বাংলাদেশ বিশ্ববিবেককে স্তব্ধ করে দিয়েছিল ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার উগ্র বাসনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার চূড়ান্ত  অপব্যবহার করে ব্যাপকভিত্তিক পদ্ধতিগতভাবে আক্রমণের মাধ্যমে সংঘটিত নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ সহিংসতা বাংলাদেশকে পরিণত করেছিল ৫৬ হাজার বর্গমাইল বিস্তৃত একটি বধ্যভূমিতে

আমরা এই বিচার শুরু করেছি জাতির ইতিহাসের সেই বেদনাদায়ক অধ্যায়ে সংঘটিত অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে, যেখানে নিরস্ত্র, নিরীহ সাধারণ নাগরিক, বিশেষ করে তরুণ ছাত্র-যুবক, নারী শিশু, যারা একটি ন্যায়ভিত্তিক ভবিষ্যতের জন্য বৈষম্য কোটা পদ্ধতি নামক প্রপ্রথার অবসানের দাবিতে অহিংস ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলতিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের প্রশাসনযন্ত্র পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, অন্যান্য বাহিনী, সরকারি দলের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং তাদের অধীনস্থ সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নির্যাতনে অংশগ্রহণ করে তাই এই বিচার শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ই নয়, বরং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধআন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন’, ‘রোম স্ট্যাটিউট অব দি আইসিসিএবং বাংলাদেশের ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল আইন অনুসারেও বিচারযোগ্য এই বিচার অতীতের প্রতিশোধ নয়; এটি ভবিষ্যতের জন্য প্রতিজ্ঞা আমরা প্রমাণ করতে চাই, একটি সভ্য সমাজ, যেখানে গণতন্ত্র আইনের শাসন থাকবে, সেখানে গণহত্যা কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধ সহ্য করা হবে না যে দেশে বিচার থাকবে, সেখানে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে নাচিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘বিচারের জন্য যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হচ্ছে তা হলোÑ প্রত্যক্ষদর্শী জীবিত ভিকটিমদের সাক্ষ্য, অপরাধ সংঘটনের সময় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ, ড্রোন এবং সিসিটিভি ফুটেজ, আসামিদের মধ্যে টেলিফোন সংলাপের অডিও ক্লিপস, ডিজিটাল অ্যাভিডেন্সের ফরেনসিক রিপোর্ট, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, গণমাধ্যম সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত তথ্য-ছবি ভিডিও, জাতীয় আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের প্রস্তুতকৃত  প্রতিবেদন, বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থা থেকে প্রাপ্ত অফিসিয়াল কুমেন্টস ইত্যাদি

আরো পড়ুন  

×