বগুড়ার মোকামতলা এলাকায় নির্মিত ৫০০ কোটি টাকার প্রাসাদের মালিক ও ঢাকার এফটিজেড-এ অবস্থিত ইউনিনিকো (প্রা. লি.)-এর চেয়ারম্যান মোঃ সাখাওয়াত হোসেন টুটুলের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের বগুড়া জেলা কার্যালয়ে দাখিলকৃত মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, টুটুল প্রায় ১০ কোটি ৪৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, যা তার ঘোষিত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।
অভিযোগপত্রের বিবরণ অনুযায়ী, ইউনিনিকো কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে সাখাওয়াত টুটুল বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। তার আয়কর নথিতে এসব সম্পদের উল্লেখ নেই। তদন্তে উঠে এসেছে, উত্তর বাড্ডার ৩২, ৩৩, ৩৪ ও ৩৫ নম্বর প্লটের জমি, একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, এফডিআর, দামি গাড়ি এবং পরিবারের সদস্যদের নামে জমি ও বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। এসব সম্পদের পেছনে বৈধ কোনো আয়ের উৎস খুঁজে পায়নি দুদক।
দুদকের তদন্তে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে বগুড়ার মোকামতলায় অবস্থিত সাখাওয়াত হোসেন টুটুলের ৫০০ কোটি টাকার প্রাসাদ। স্থানীয়রা একে “রাজপ্রাসাদ” বলে আখ্যায়িত করেছেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, তার ব্যবসায়িক আয়ের সঙ্গে এ ধরনের বিলাসবহুল স্থাপনার মালিকানা সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। এত বিপুল সম্পদের উৎস নিয়ে জোর প্রশ্ন তুলেছে দুদক, যা আইনি প্রক্রিয়ায় যাচাই করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
একসময় রাজধানী ঢাকায় কোচিং ও প্রাইভেট টিউশন দিয়ে জীবিকা শুরু করেছিলেন সাখাওয়াত হোসেন টুটুল। আজ তিনি কীভাবে বিপুল বিত্তের মালিক হলেন, তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তার বিপুল অর্থসম্পদ কি সফল ব্যবসায়িক প্রচেষ্টার ফল, নাকি এর আড়ালে লুকিয়ে আছে কোনো দুর্নীতির জাল? এ প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে।
এ বিষয়ে সাখাওয়াত হোসেন টুটুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় জানিয়েছেন, সাখাওয়াত হোসেন টুটুল একজন বহুমুখী ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকার ধানমন্ডিতে অবস্থিত অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অন্যতম উদ্যোক্তা বা মালিকানার অংশীদার। এছাড়া তিনি টাটকা ফুড প্রোডাকশন ফ্যাক্টরি (গাজীপুর), এএইচজেড কোল্ড স্টোরেজ, ইটভাটা এবং এএইচজেড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের মতো বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
সানজানা
