ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিসিএস ও অন্য চাকরির মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০০:০০, ২৫ নভেম্বর ২০২২

বিসিএস ও অন্য চাকরির  মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি

.

আমি মোট পাঁচটি প্রথম শ্রেণির চাকরির ভাইভায় অংশগ্রহণ করেছি (আরও কয়েকটিতে ডাক পেয়েছি, অংশগ্রহণ করিনি)। সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার ও চারটি বিসিএস ভাইভার সবগুলোতেই আমার চাকরি হয়েছে (কোটা নেই)। এই পরিসংখ্যান দেখে কেউ হয়তো ভাবতে পারেন আমি ভাইভায় খুব ভালো করেছি। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় সবগুলো চাকরি-ই আমি পেয়েছি লিখিত পরীক্ষায় খুব ভালো নম্বর ছিল বলে। তবে ভাইভায় ফেল করিনি, এটা ঠিক।
যাই হোক, উপরের কথাগুলো বলার উদ্দেশ্য ভাইভা নিয়ে আপনাদের ভীতি কমানো। ভাইভা আসলেই তেমন ভীতিকর বিষয় না। চাকরির পরীক্ষার জন্য ভাইভা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, এবং ভালো প্রস্তুতি না থাকলে যে কেউ মনোবলের অভাবে অস্বাভাবিক কোনো ফল করে ফেলতে পারে। তাই ভাইভা বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। কয়েকটি পরামর্শ-
১. ভাইভা দিচ্ছেন মানে আপনি প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। অন্যরাও আপনার মতোই। সুতরাং নিজেকে দুর্বল ভাবা বন্ধ করুন।
২. ভাইভার প্রস্তুতির জন্য ভালো চাকরি করেন এ রকম দুই একজনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারেন। এতে কিছু খুঁটিনাটি বিষয় সহজে জানতে পারবেন।
৩. ভালো পোশাক ও পরিচ্ছন্ন আউটলুক অবশ্যই লাগবে। এ নিয়ে অনেক লেখা আছে অনলাইনে, খুঁজে পড়ুন।
৪. চাকরির ভাইভা মানে নিজেকে উপস্থাপন করা। নিজেকে উপস্থাপনের আগে নিজেকে জানুন। খুব ভালোভাবে জানুন।
- নাম, নামের অর্থ, একই নামের বিশিষ্ট ব্যক্তি
- স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়
- জন্মস্থান, নিজ জেলার সম্ভব সবকিছু
- প্রিয় কবি, খেলা, মানুষ, গান, বই ইত্যাদি সম্ভব সবকিছু
৫. বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, চারনেতা, ভাষা আন্দোলন, ভাষা শহীদ, বীরশ্রেষ্ঠ, সেক্টর কমান্ডার ইত্যাদি সবকিছু।
৬. সংবিধান, সরকার, রাষ্ট্র, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিচার বিভাগ, আইনসভা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও ইত্যাদি।
৭. ক্যাডার চয়েজ রিলেটেড সবকিছু
৮. নিজ সাবজেক্টের মজার বিষয়, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বড় মানুষ, নিজ সাবজেক্টের কমন বিষয় যা মোটামুটি সবাই জানে।
৯. সাম্প্রতিক বিষয়, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলির সবকিছু, খেলাধুলা, বৈশ্বিক আলোচিত ইস্যু, আন্তর্জাতিক সংস্থা ইত্যাদি।
১০. সরকারের অর্জন, জঙ্গিবাদসহ এ জাতীয় সবকিছু।
কিভাবে পড়বেন
* প্রথমে বেশ কয়েকটি খাতা বানাবেন। এবার তথ্য সংগ্রহ শুরু করুন।
* বাজারে ভাইভার বই আছে, কয়েকটি দেখে, পড়ে কিনুন।
* গুগল, উইকিপিডিয়া সর্বোপরি ইন্টারনেট থেকে তথ্য কালেক্ট করুন এবং নোট করুন।
*ভাইভা শুরু হলে ফেসবুকে অনেকে ভাইভা শেয়ার করবে সেগুলো ফলো করুন। একটা ধারণা পাবেন এতে।
*আপডেট থাকুন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
* কিছু কমন প্রশ্ন করে, যেমন- কেন এই চাকরি করতে চাও, এর সঙ্গে তোমার পঠিত বিষয়ের সম্পর্ক কি ইত্যাদি, এগুলো আগে থেকেই গুছিয়ে লিখে চর্চা করুন।
* ইংরেজিতে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ। মোটামুটি একটা মানের কথা যাতে বলতে পারেন সেজন্য নিয়মিত চর্চা করুন।
* পোশাক আগেই অন্তত দুই সেট গুছিয়ে রাখুন।
* কাগজপত্র যথাযথভাবে গুছিয়ে রাখুন আগেই।
শেষ কথা
ভাইভার জন্য আমি সম্ভব সবকিছু করেছি। এরপরও ভাইভা আশানুরূপ হতো না। কিন্তু চাকরি হতো। চাকরি হলেই তো হয়, ভাইভা আশানুরূপ না হলে কি আসে যায়? প্রস্তুতি নিন, মনোবল বাড়ান। মনে রাখবেন, দিনশেষে জয়ীর কথাই সবাই শোনে। সৎ থাকার মানসিকতা নিয়ে চাকেিত আসুন, দেশ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে।

 

 

×