ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৮ আগস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

ট্রাম্পের শুল্কে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়ানোর শঙ্কা

প্রকাশিত: ১৭:৩১, ৮ আগস্ট ২০২৫

ট্রাম্পের শুল্কে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়ানোর শঙ্কা

রাশিয়ার কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার জেরে ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যা যোগ হয়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। এশিয়ায় এটি সর্বোচ্চ শুল্কহার, ব্রাজিলের পর বিশ্বে দ্বিতীয়। এই সিদ্ধান্তে হুমকির মুখে পড়েছে মার্কিন বাজারে ভারতের রপ্তানি খাত।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করলেও, ভারত সুযোগ কাজে লাগিয়ে এখন রাশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম ক্রেতায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ২০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করে ভারত, যা তাদের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির ৩৫–৪০ শতাংশ। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার অর্থনীতি সচল রাখার জন্য বহুদিন ধরেই ভারতকে সমালোচনা করে আসছে ইউক্রেনের মিত্ররা।

ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে বন্ধু মোদিকে সতর্ক করেছিলেন রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে। তার অভিযোগ, এই তেল বিক্রির অর্থ ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু ভারত রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকে, যা ট্রাম্পের ক্ষোভ বাড়িয়ে দেয় এবং এর ফলেই বাড়তি শুল্কের সিদ্ধান্ত আসে।

পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে, কারণ শিগগিরই মার্কিন কংগ্রেসে একটি কঠোর বিল আনা হতে পারে, যেখানে রাশিয়ার তেল কিনলে শুল্ক ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত করার প্রস্তাব রয়েছে। একই সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নও ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৬ সাল থেকে রাশিয়ান তেল দিয়ে তৈরি পণ্য তারা কিনবে না, এমনকি তা ভারত থেকে এলেও।

ভারত যদি হঠাৎ রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করে, তাহলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে, যা ভারতের খরচ বাড়াবে এবং কোম্পানির মুনাফা কমিয়ে দেবে। বিকল্প তেলের উৎস খুঁজে পাওয়াও কঠিন হবে। তবে ব্যবসায়ী মহলের ধারণা, ট্রাম্পের চাপের মুখে ভারতীয় রিফাইনারিগুলো ইতোমধ্যে রাশিয়ার অর্ডার ৪০–৫০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে লাভবান হতে পারে চীন। ভারত সরে গেলে চীন আরও সাশ্রয়ী মূল্যে রাশিয়ার তেল কিনতে পারবে, আর রাশিয়াও চীনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে, ট্রাম্প কতদিন এই কঠোর অবস্থান ধরে রাখতে পারবেন। অতীতে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা দিলে তেলের দাম বেড়ে গিয়েছিল, পরে চাপে পড়ে নরম হতে হয়েছিল তাকে। তাই বিশ্লেষকদের ধারণা, এই নীতি থেকেও ছয় মাসের মধ্যে সরে আসতে হতে পারে ট্রাম্পকে, যাতে চীনের হাতে অতিরিক্ত সুবিধা চলে না যায়।

Jahan

আরো পড়ুন  

×