ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৮ আগস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

পুতিন শেষ হলেও রাশিয়ার ‘ডেড হ্যান্ড’ দুনিয়া ধ্বংস করতে সক্ষম

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ৮ আগস্ট ২০২৫

পুতিন শেষ হলেও রাশিয়ার ‘ডেড হ্যান্ড’ দুনিয়া ধ্বংস করতে সক্ষম

ছবিঃ সংগৃহীত

ধরে নিন, প্রতিপক্ষের পারমাণবিক হামলায় নিহত হয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিশ্চিহ্ন। তাহলে কি রাশিয়া অসহায় আত্মসমর্পণ করবে? একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি?

উত্তর—‘না’। কারণ, রাশিয়ার হাতে রয়েছে এমন এক ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ ব্যবস্থা, যা কোনো কমান্ড ছাড়াই চালিয়ে যেতে পারে ধ্বংসযজ্ঞ। এই ব্যবস্থার নাম—‘ডেড হ্যান্ড’, বা অন্য নামে ‘পেরিমিটার সিস্টেম’।

স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি এই স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের হঠাৎ আক্রমণের পর পাল্টা আঘাত নিশ্চিত করতেই তৈরি করা হয়েছিল। যদি রুশ শীর্ষ নেতৃত্ব একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তবুও এই সিস্টেম শত্রুদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর পারমাণবিক প্রতিশোধে সক্ষম।

বিশেষ সেন্সরের মাধ্যমে ডেড হ্যান্ড মাপে ভূকম্পন, আলো, তেজস্ক্রিয়তা ও বায়ুচাপ। যদি পারমাণবিক বিস্ফোরণের সংকেত মেলে এবং শীর্ষ কমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তাহলে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল (ICBM) উৎক্ষেপণ শুরু করে।

রাশিয়ার হাতে বর্তমানে প্রায় ১,৬০০ মোতায়নযোগ্য কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। একটি মাত্র সংকেত পেলেই পুরো সিস্টেম সক্রিয় হয়ে যেতে পারে। একবার চালু হলে এই ব্যবস্থা রাশিয়ার ধ্বংসের মধ্যেও সারাবিশ্বে পাল্টা পারমাণবিক হামলা চালিয়ে যেতে পারে।

মূলত দুই পক্ষকেই নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার মতো ক্ষমতাই এই ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য। যাতে কেউ প্রথমে পারমাণবিক হামলার চিন্তা না করে।

রুশ গণমাধ্যম বলছে, এই ব্যবস্থা এখনো সক্রিয়। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এটি হাইপারসনিক মিসাইল ও আধুনিক রাডার প্রযুক্তির সঙ্গে আরও উন্নত করেছেন।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বের ৯টি দেশের কাছে রয়েছে ১২,২৪১টি পারমাণবিক ওয়ারহেড। এর মধ্যে রাশিয়ার আছে সবচেয়ে বড় অস্ত্রাগার—সাড়ে ৭ হাজারেরও বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে প্রায় ৫,০০০টি। উভয় দেশের কাছেই প্রায় ১,৫০০টি করে মোতায়নযোগ্য পারমাণবিক ওয়ারহেড এবং শক্তিশালী সাবমেরিন বহর রয়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলের পর কিছু সাবমেরিনের অবস্থান ও পরমাণু সক্ষমতা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।

ইমরান

আরো পড়ুন  

×