
ছবি: সংগৃহীত।
ভারতের আসাম রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়নের অংশ হিসেবে আবারও শুরু হয়েছে উচ্ছেদ অভিযান। রাজ্যের গোয়ালপাড়া শহরে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্রায় ৫০০ পরিবারকে ঘিরে গড়ে ওঠা একটি মুসলিম বসতি। এখন তারা আশ্রয় নিয়েছে অস্থায়ী তাবুতে, যেখানে নেই পর্যাপ্ত খাবার, বিশুদ্ধ পানি বা ন্যূনতম স্যানিটেশন সুবিধাও।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা এই উচ্ছেদ অভিযানের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন। তিনি এসব মুসলিম পরিবারকে "বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী" বলে উল্লেখ করেছেন। যদিও উচ্ছেদ হওয়া বাসিন্দাদের দাবি, তারা বহু প্রজন্ম ধরে আসামে বসবাস করে আসছেন এবং তাদের কাছে রয়েছে বৈধ নাগরিকত্বের কাগজপত্র।
এক ভুক্তভোগী বলেন, "তারা আমাদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এখন এই তাবুতে পরিবার নিয়ে কোনোমতে দিন কাটাচ্ছি। খাবার নেই, পানি নেই, সরকারও কোনো সহায়তা করেনি। এমনকি টয়লেট নিজেরাই ঠিক করেছি।"
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই উচ্ছেদ অভিযানের পেছনে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার সরাসরি নির্দেশ রয়েছে। ২০২১ সালে তিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকে আসাম রাজ্যে অন্তত ৫ হাজার মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়েছে—যাদের অধিকাংশই মুসলিম।
মানবাধিকার বিশ্লেষকদের মতে, রাজ্যের শাসকদল বিজেপি আসন্ন নির্বাচনের আগেই মুসলিমবিরোধী রাজনীতি চাঙ্গা করতে চাইছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে ভারতঘনিষ্ঠ সরকারের পতনের পর থেকে আসামে মুসলিমদের প্রতি আচরণ আরও শত্রুভাবাপন্ন হয়ে উঠেছে।
এক নারী বলেন, "আমরা কেন বাংলাদেশি হবো? আমাদের কাছে দাদা, বাবা-চাচার নাগরিকত্বের কাগজ আছে। সরকারের যা যা প্রমাণ দরকার, সব আমাদের হাতে রয়েছে। অথচ আমাদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, কেবল মুসলিম বলেই।"
নুসরাত