
ছবি: সংগৃহীত।
ইউক্রেন, ফিলিস্তিন, ইসরাইল বা ইরান নয়—এবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শুরু হয়েছে নতুন এক সীমান্ত সংঘাত। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্ত উত্তেজনা রূপ নিয়েছে সরাসরি সংঘর্ষে। এতে অন্তত ১২ জন থাই নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে থাই কর্তৃপক্ষ। যদিও কম্বোডিয়ায় হতাহতের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করেনি দেশটি।
সংঘর্ষের জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করেছে উভয় পক্ষ। থাই সেনাবাহিনী অভিযোগ করেছে, কম্বোডিয়া প্রথমে রকেট হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় থাইল্যান্ড পাল্টা বিমান হামলা চালায় কম্বোডিয়ার সামরিক অবস্থানে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক উত্তেজনার সূচনা হয়েছে সীমান্তে গুলিচালনার একটি ঘটনা থেকে। যদিও দুই দেশের মধ্যে শত্রুতা নতুন নয়। এর শিকড় এক শতাব্দীরও পুরনো—ফরাসি উপনিবেশিক আমলে সীমানা পুনর্নির্ধারণ থেকে শুরু হওয়া বিরোধ ২০০৮ সালে আবার চরমে ওঠে, যখন একটি বিরোধপূর্ণ প্রাচীন মন্দিরকে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা দেয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও সেগুলো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি আরও জটিল। চলতি বছরের মে মাসে এক সংঘর্ষে একজন কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হলে দুই দেশের সম্পর্ক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে পৌঁছায়। এর ফলে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা, ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ আমদানি বন্ধ এবং সেনা মোতায়ন বেড়েছে।
থাইল্যান্ডের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হুমথাম ভেজা আচাই বলেছেন, “এই বিরোধ খুবই সংবেদনশীল, আন্তর্জাতিক আইন মেনে তা সতর্কতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে।” অন্যদিকে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেদ জানান, “আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই, তবে সশস্ত্র আগ্রাসনের জবাবে প্রতিরোধ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।”
বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক সংবাদদাতা জোনাথন হেড বলেন, “পূর্বেও সীমান্তে গোলাগুলি হয়েছে, কিন্তু তখন নেতৃত্ব দৃঢ় ছিল। এখন উভয় দেশেই নেতৃত্ব দুর্বল, ফলে সংঘর্ষ কত দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।”
নুসরাত