
ছবি: সংগৃহীত।
থাইল্যান্ড কম্বোডিয়ার সঙ্গে চলমান সংঘাত নিরসনে তৃতীয় কোনো দেশের মধ্যস্থতা প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটি জানিয়েছে, সমস্যা সমাধানে কেবলমাত্র দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই অগ্রগতি সম্ভব, এবং প্রথমে নম পেনকে হামলা বন্ধ করতে হবে। শুক্রবার থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে চলা সীমান্ত উত্তেজনা সম্প্রতি প্রকাশ্য সংঘাতে রূপ নিয়েছে। দ্বিতীয় দিনের মতো বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় গোলাবিনিময় চলছে। গত এক দশকে প্রতিবেশী দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশদ্বয়ের মধ্যে এটিই সবচেয়ে তীব্র সংঘর্ষ। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই থাই বেসামরিক নাগরিক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং আসিয়ান (ASEAN) আঞ্চলিক জোটের বর্তমান চেয়ার মালয়েশিয়া এই উত্তেজনা নিরসনে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে থাইল্যান্ড কেবলমাত্র দ্বিপাক্ষিক সমাধানে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিকোরন্ডেজ বালানকুরা।
তিনি রয়টার্সকে বলেন, “আমরা এখনো তৃতীয় কোনো দেশের মধ্যস্থতা প্রয়োজন বলে মনে করি না।”
কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড উভয় দেশই বৃহস্পতিবার ভোরে একটি বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলে সংঘর্ষ শুরুর দায় একে অপরের ওপর চাপিয়েছে। ছোট অস্ত্রের গুলিবিনিময় থেকে দ্রুতই তা ভারী গোলাবর্ষণে রূপ নেয়। এই সীমান্ত অঞ্চল নিয়ে দুই দেশের মধ্যে শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে সার্বভৌমত্ব বিরোধ চলমান।
নিকোরন্ডেজ বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থানে অটল রয়েছি যে, দ্বিপাক্ষিক ব্যবস্থাই উত্তরণের সর্বোত্তম পথ। এটা দুই দেশের মধ্যকার একটি সংঘর্ষ।” তিনি আরও বলেন, “প্রথমে কম্বোডিয়াকে সীমান্ত এলাকায় সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। আমাদের দরজা আলোচনার জন্য এখনো খোলা।”
কম্বোডিয়ার সরকার এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে এই বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে “অকারণ ও পূর্বপরিকল্পিত সামরিক আগ্রাসনের” অভিযোগ করেছেন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, শুক্রবার এই ইস্যুতে একটি বন্ধ কক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সংঘাত শুরু হয় বুধবার, যেদিন থাইল্যান্ড নম পেন থেকে নিজ রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে এবং কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে। এর আগে থাই সৈন্যরা ল্যান্ডমাইনে আহত হয়, যা থাই কর্তৃপক্ষের মতে, সম্প্রতি কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে পুঁতে রাখা হয়েছিল। কম্বোডিয়া এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, যিনি আসিয়ানের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি উভয় দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
নিকোরন্ডেজ আরও বলেন, “যদি আসিয়ান পরিবার দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ফের শুরু করতে সহায়তা করতে চায়, তবে সেটাও আমরা স্বাগত জানাই।”
সূত্র: রয়টার্স
মিরাজ খান