
ছবি: সংগৃহীত
তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় সানলিউরফা প্রদেশে ইউফ্রেটিস নদীর তীরে অবস্থিত হাফেতি শহরের বড় একটি অংশ এখন পানির নিচে। ২০০০ সালে ২০০ ফুট উঁচু ও ১.৫ মাইল প্রশস্ত বিরেজিক বাঁধ নির্মাণের ফলে হাফেতির ৪০% এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়।
একসময় পশুপালন ও কৃষিনির্ভর এই শহরের মানুষ এখন পর্যটনকে আঁকড়ে ধরেছেন। কেউ বাড়িকে রেস্তোরাঁ বানিয়েছেন, কেউ তৈরি করেছেন ভাসমান ক্যাফে। এখন হাফেতিতে পর্যটকরা নৌকাভ্রমণ, জেট স্কি, ডাইভিং কিংবা ফ্লাইবোর্ডিং উপভোগ করেন।
বিশ্ব রেকর্ডধারী ফ্রিডাইভার সাহিকা এরচুমেন ২০২০ সালে এখানে ডুব দিয়েছিলেন প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়তে। নিচে বিস্তৃত প্রাকৃতিক চুনাপাথরের গুহা ও নদীর মাছ যেন পানির নিচে এক ইতিহাসের চিত্রকল্প।
হাফেতি বিখ্যাত আরেকটি কারণে, কালো গোলাপ। স্থানীয়রা দাবি করেন, বিশ্বের একমাত্র স্থান হাফেতি, যেখানে সত্যিকার কালো গোলাপ ফোটে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলেন, তা আসলে গাঢ় বেগুনি বা গভীর লাল।
রোজ এক্সপার্ট মাইকেল ম্যারিয়ট বলেন, “এটা সম্ভবত হাফেতির মাটির অম্লতা ও আবহাওয়ার কারণে।” স্থানীয় এক উপকথা অনুসারে, এক নিষিদ্ধ প্রেমের পরিণতিতে প্রেমিক যুগলের আত্মাহুতির পর থেকেই গোলাপগুলো কালো রঙে ফোটে যেন বিষাদ আর প্রেমের প্রতীক হয়ে।
হাফেতি থেকে এক ঘণ্টার নৌভ্রমণে যাওয়া যায় রুমকাল দুর্গে, যার ভিত্তি বাইজানটাইন যুগে স্থাপিত। পরে এটি আরমেনিয়ান চার্চের আধ্যাত্মিক নেতার বাসভবন ছিল, তারপর মামলুক ও ওসমানীয়দের হাতে আসে। আজও এই দুর্গ ইতিহাসের স্তরজড়ানো সাক্ষ্য বহন করে।
২০১৩ সালে হাফেতি “Cittaslow” বা ধীর গতির শহর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। স্থানীয় সংস্কৃতি রক্ষা, পরিবেশবান্ধব জীবনধারা এবং ইতিহাসের সংরক্ষণ এই স্বীকৃতির পেছনে মূল কারণ।
মুমু ২