ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২

মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন বাতিল: মুম্বাই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় সবাইকে খালাস

প্রকাশিত: ১৯:০৪, ২১ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৯:১০, ২১ জুলাই ২০২৫

মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন বাতিল: মুম্বাই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় সবাইকে খালাস

ছবি: সংগৃহীত

২০০৬ সালের মুম্বাই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত ১২ জনকে খালাস দিয়েছে ভারতের বোম্বে হাইকোর্ট। সোমবার (২১ জুলাই) দেওয়া এক রায়ে আদালত জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।

২০১৫ সালে এ মামলার রায়ে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল একটি বিশেষ আদালত। তবে প্রায় এক দশক পর বোম্বে হাইকোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ সেই রায় বাতিল করে দেয়। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, অভিযুক্তরা যে অপরাধ করেছে, রাষ্ট্রপক্ষ তা আদালতে যথাযথভাবে প্রমাণ করতে পারেনি।

তবে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে ভারতের রাষ্ট্রপক্ষ চাইলে উচ্চতর আদালতে আপিল করতে পারবে।

২০০৬ সালের ১১ জুলাই সন্ধ্যায় অফিস শেষে ঘরে ফেরা ভিড়ের সময় মুম্বাইয়ের ব্যস্ত লোকাল ট্রেনে সাতটি বিস্ফোরণ হয়। মাত্র ছয় মিনিটের ব্যবধানে হওয়া এসব বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা শহর। বোমাগুলো চাপা ছিল প্রেসার কুকারে, যা ব্যাগে করে ট্রেনের মধ্যে রাখা হয়েছিল।

বিস্ফোরণ হয় মাটুঙ্গা, খার, মাহিম, যোগেশ্বরী, বোরিভলি ও মীরা রোড এলাকার চলন্ত ট্রেন এবং দুটি স্টেশনে। লক্ষ্য ছিল মূলত ট্রেনের ফার্স্ট ক্লাস কামরাগুলো, যেখান দিয়ে শহরের অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে যাত্রীরা ফিরছিলেন।

ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই হামলার পেছনে পাকিস্তান-সমর্থিত ইসলামি জঙ্গিদের দায়ী করেছিল, যদিও পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে।

বিস্ফোরণের পরপরই আটক করা অভিযুক্ত ১২ জন দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে কারাগারে ছিলেন। তাদের মধ্যে কামাল আনসারি নামের একজন ২০২১ সালে করোনা ভাইরাসে মারা যান।

২০১৫ সালে বিশেষ আদালত এই ১২ জনকে হত্যা, ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে। রাষ্ট্রপক্ষ যেখানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর চেয়ে উচ্চ আদালতে গিয়েছিল, সেখানে আসামিপক্ষ সম্পূর্ণ খালাস চেয়ে আপিল করেছিল।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে বোম্বে হাইকোর্ট একটি দুই বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করে শুনানি দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দেয়। এরপর ছয় মাসে ৭৫টির বেশি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষ্য দেন রাষ্ট্রপক্ষের ৯২ জন এবং আসামিপক্ষের ৫০ জনের বেশি সাক্ষী।

সোমবার দেওয়া ৬৬৭ পৃষ্ঠার রায়ে আদালত উল্লেখ করে, রাষ্ট্রপক্ষ যে সাক্ষ্য ও স্বীকারোক্তি উপস্থাপন করেছে, সেগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে যুক্তিপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছে আসামিপক্ষ। আদালত আরও স্বীকার করে, উদ্ধার করা আলামতও প্রক্রিয়াগতভাবে ‘সঠিকভাবে সিল করা অবস্থায় সংরক্ষিত ছিল না’।

 

সূত্র: বিবিসি।

রাকিব

×