
ছবি: সংগৃহীত
সাম্প্রতিক ইসরাইল-ইরান সংঘাতে আকাশ প্রতিরক্ষায় আংশিক সাফল্য পেলেও ইসরাইলের আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে উল্লেখযোগ্য ক্ষতির মুখে পড়েছে ইরান। তাই নিজ দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে চীনের সহায়তায় নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারি সংগ্রহ করেছে তেহরান।
লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই জানায়, গত ২৪ জুন ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির পর চীন থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারি সরবরাহ শুরু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একাধিক আরব গোয়েন্দা কর্মকর্তা। এক আরব কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র আরব রাষ্ট্রগুলো ইতিমধ্যে তেহরানের প্রতিরক্ষা জোরদারের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং হোয়াইট হাউসকেও অবহিত করেছে।
ইরান ঠিক কতগুলো ব্যাটারি পেয়েছে তা না জানালেও জানা গেছে, এসব অস্ত্রের বিনিময়ে তেহরান চীনকে অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করছে। ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (EIA)-এর মে মাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের ৯০ শতাংশের বেশি অপরিশোধিত তেল ও কনডেনসেট রপ্তানি হয় চীনে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই অস্ত্র সরবরাহ চীন-ইরান সম্পর্কের নতুন এক ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দেয়। এর আগে পশ্চিমা বিশ্লেষকরা ধারণা করেছিলেন, ইসরাইলের হামলার সময় চীন ও রাশিয়া ইরান থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিল। তবে বর্তমান অস্ত্র চুক্তি সেই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে।
উল্লেখ্য, ইসরাইলের হামলায় ইরানের বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণস্থল ধ্বংস হয় এবং কয়েকজন জেনারেল ও বিজ্ঞানী নিহত হন।
বর্তমানে ইরান রাশিয়ার তৈরি এস-৩০০, চীনের কিছু পুরনো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং নিজেদের তৈরি খোরদাদ সিরিজ ও বাবার-৩৭৩ ব্যবহারের মাধ্যমে আকাশ প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান প্রতিরোধে এসব প্রযুক্তির সক্ষমতা সীমিত।
প্রসঙ্গত, ১৯৮০-এর দশকে ইরাক যুদ্ধের সময় ইরান চীনের সহায়তায় উত্তর কোরিয়ার মাধ্যমে সিল্কওয়ার্ম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সংগ্রহ করে এবং পরে কুয়েত ও মার্কিন ট্যাংকার লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
২০১০ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ইরান চীনের কাছ থেকে HQ-9 বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রও সংগ্রহ করেছে।
চলমান এই চুক্তি ও সহযোগিতা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সামরিক ভারসাম্য ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শেখ ফরিদ