
ছবি: সংগৃহীত
চোখে অশ্রু, কণ্ঠে ক্ষোভ—চাকরি হারানোর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন বহু কর্মী। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে শুক্রবার একদিনেই ছাঁটাই করা হয়েছে প্রায় ১,৪০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। চাকরির পেছনে জীবনভর শ্রম দেওয়া অনেকের জন্য এমন পরিণতি যেন বজ্রাঘাতের মতো। মাথার উপর থেকে যেন ছাদ সরে গেছে—এমনই ভাষায় নিজেদের হতাশা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ওয়াশিংটন বলছে, এ ছাঁটাই কোনো তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নয় বরং কূটনৈতিক খাতে গঠনমূলক সংস্কারের অংশ। সরকারের ভাষায়, ‘পররাষ্ট্র নীতিতে দক্ষতা ও আধুনিকায়নের প্রয়োজনে’ তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের অভিযোগ—এটি একটি নিষ্ঠুর এবং অমানবিক সিদ্ধান্ত।
ছাঁটাই প্রক্রিয়ার আওতায় পড়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে দপ্তরের ব্যাজ, ল্যাপটপ, টেলিফোনসহ সব অফিসিয়াল সরঞ্জাম ফেরত নেওয়া হচ্ছে। ধাপে ধাপে মোট ৩,০০০ কর্মীকে ছাঁটাই করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
একজন বর্ষীয়ান কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি ৩০ বছর আমেরিকার স্বার্থ রক্ষায় বিদেশে কাজ করেছি। আজ আমাকে যেভাবে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হলো, তা জীবনের সবচেয়ে অপমানজনক মুহূর্ত।’
আরেকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার সহকর্মী পাঁচটি ভাষায় কথা বলতে পারতেন—তাকেও রাখা হয়নি। এটি কেবল একজনের চাকরি হারানো নয়, বরং পুরো আমেরিকান কূটনীতির জন্য বড় ধাক্কা।’
এমন কঠোর পদক্ষেপের প্রতিবাদে মুখ খুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক নেতারাও। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে চিঠি পাঠিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন একাধিক সেনেটর। মেরিল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক সেনেটর ক্রিস ভ্যান হলেন পররাষ্ট্র দপ্তরের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ দেশের ভাবমূর্তি ও বৈশ্বিক অবস্থানকে দুর্বল করে তুলছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আদালতে, কংগ্রেসে যাব।’
বিশ্লেষকদের মতে, এমন সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক অবস্থানকে আরও দুর্বল করে তুলবে। বিশেষ করে যখন চীন ও রাশিয়া আগ্রাসী কূটনীতির মাধ্যমে বিশ্বে নিজেদের প্রভাব বিস্তারে ব্যস্ত, তখন এ ধরনের ছাঁটাই পশ্চিমা নেতৃত্বের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=movYnk48SwA
রাকিব