ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা: রহস্য ঘনীভূত করছে ককপিটের ভয়েস রেকর্ডিং

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:০২, ১৩ জুলাই ২০২৫

এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা: রহস্য ঘনীভূত করছে ককপিটের ভয়েস রেকর্ডিং

ছবি: সংগৃহীত

জুন মাসে ভারতের আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত হওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৭১-এর ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ২৬০ জন নিহত হন। এই দুর্ঘটনা নিয়ে চলমান তদন্তে এক চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে। টেকঅফের কয়েক সেকেন্ড পরই উড়োজাহাজের ইঞ্জিন ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ দুটি "কাট-অফ" পজিশনে চলে যায়, যার ফলে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং পুরোপুরি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিমানটি।

ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে ধরা পড়ে একজন পাইলট অপরকে প্রশ্ন করছেন, “তুমি কেন কাট-অফ করলে?” উত্তরে বলা হয়, “আমি করিনি।” তবে কে প্রশ্ন করেছিল এবং কে উত্তর দিয়েছিল তা স্পষ্ট নয়। তদন্তে জানা যায়, সেই সময় কো-পাইলট বিমানটি চালাচ্ছিলেন এবং প্রধান পাইলট পর্যবেক্ষণ করছিলেন।

যদিও সুইচগুলি আবার ‘রান’ অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয় এবং ইঞ্জিন পুনরায় চালু হয়, তখন এক ইঞ্জিন সামান্য থ্রাস্ট পুনরুদ্ধার করছিল, অন্যটি তখনো পূর্ণ ক্ষমতায় ফিরে আসেনি। বিমানটি মাত্র ৬২৫ ফুট উচ্চতায় উঠতেই কন্ট্রোল হারিয়ে পড়ে যায় একটি জনবহুল আবাসিক এলাকায়।

বিমান নির্মাতা বোয়িং এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক তদন্তকারী সংস্থার সদস্যরা বলছেন, ফুয়েল সুইচগুলোতে ‘লকিং’ মেকানিজম রয়েছে। একটি হাত দিয়ে দুটো সুইচ একসঙ্গে টানা প্রায় অসম্ভব। সুরক্ষার জন্য ব্র্যাকেটও আছে, যাতে ভুল করে টিপে ফেলা না যায়। ফলে, এই ভুল ‘দুর্ঘটনা’ মনে হচ্ছে না।

ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির উড়োজাহাজ বিশেষজ্ঞ শন প্রুচনিকি বলেন, “যদি পাইলটই সুইচ বন্ধ করেন, তাহলে প্রশ্ন ওঠে কেন? ইচ্ছাকৃত না কি বিভ্রান্তি? কিন্তু কোন আলোচনাই হয়নি যে তারা ভুল করেছে।” তদন্তকারীরা বলছেন, ককপিট রেকর্ডার বিশ্লেষণ করতে হবে আরও গভীরভাবে এবং কে কী বলেছে তা সনাক্ত করাও অত্যন্ত জরুরি। এ জন্য পরিচিত ব্যক্তি দ্বারা কণ্ঠ শনাক্ত করা প্রয়োজন।

যদি ককপিটে ভিডিও রেকর্ডার থাকতো, তাহলে দেখা যেত কার হাত গিয়েছিল সেই সুইচের দিকে। এমন রেকর্ডার যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা আবারও সামনে এসেছে।

একজন বোয়িং ৭৮৭ পাইলট বলেন, “৬০০ ফুট উচ্চতায় পুরো ঘটনা ঘটে গেছে। এই সময়টা খুবই কম। দুই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলে, পাইলট অবচেতনভাবে শুধু অবতরণের স্থান খোঁজেন—গিয়ারের কথা ভাবেন না।”

ইমতিয়াজ আলি, দুর্ঘটনায় ভাই, ভাবি ও তাদের দুই সন্তানকে হারিয়েছেন। তিনি বলেন, “প্রাথমিক প্রতিবেদন শুধু যন্ত্রের বিবরণ দিয়েছে, কিন্তু সত্যিকারের কারণ স্পষ্ট না।” তিনি বলেন, “আমাদের কিছুই ফিরবে না, কিন্তু অন্তত জানার অধিকার তো আছে। আমরা উত্তর চাই।”

মুমু ২

×