
ছবি: সংগৃহীত
ফ্লোরিডার ২০ বছর বয়সী আমেরিকান নাগরিক সাইফুল্লাহ মুসাল্লাতকে ইসরায়েলি বসতকারীরা পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গত শুক্রবার (১১ জুলাই) ইসরায়েলি বসতকারীরা টানা তিন ঘণ্টা সাইফকে ঘিরে রেখে নির্যাতন চালায় এবং যে চিকিৎসাকর্মীরা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন, তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “সাইফ ছিল একজন উদার, পরিশ্রমী ও সম্মানিত তরুণ। তার এমন নির্মম মৃত্যু আমাদের জন্য এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন। আমরা চাই, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেতৃত্ব দিক এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করুক।”
যুক্তরাষ্ট্র অতীতেও ইসরায়েলি সেনা বা বসতকারীদের হাতে নিহত মার্কিন নাগরিকদের ঘটনায় তদন্ত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, এমনকি কোনও অপরাধীকেও বিচারের আওতায় আনা হয়নি। প্রসঙ্গত, ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নয়জন মার্কিন নাগরিক নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ। কিন্তু কোনও হত্যাকাণ্ডেই এখনো বিচার হয়নি।
শুক্রবার রাতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, “বিদেশে থাকা মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।” তবে মুসাল্লাতের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানানো হয় পরিবারের গোপনীয়তার কারণ দেখিয়ে।
‘আমেরিকান মুসলিমস ফর প্যালেস্টাইন’ (AMP) জানায়, “ট্রাম্প কি এখনো আমেরিকা ফার্স্ট নীতিতে অটল থাকবেন, যখন একজন ফিলিস্তিনি-মার্কিন তরুণকে হত্যা করা হলো? নাকি আবারো মাথা নত করবেন ইসরায়েলের সামনে?”
AMP ও অন্যান্য সংগঠন স্পষ্টভাবে জানায়, মার্কিন নাগরিকত্ব না থাকলেও প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া উচিত।
আরেকটি মানবাধিকার সংগঠন DAWN-এর প্রধান সারা লিয়া হুইটসন বলেন, “মুসাল্লাত হত্যাকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। এর মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকদের ওপর হামলার দৃষ্টান্ত তৈরি হচ্ছে।”
নিহত সাইফুল্লাহ মুসাল্লাত ফ্লোরিডার বাসিন্দা ছিলেন এবং গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে পশ্চিম তীরে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি যখন অবৈধ ভূমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিলেন, তখনই তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। একই ঘটনায় আরও এক ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হন।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার হামাসের হাতে নিহত মার্কিনদের ঘটনায় বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করলেও, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি নিপীড়নের শিকার মার্কিনদের বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
মুমু ২