ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

ইসরাইলকে বাঁচাতে আমেরিকার নতুন ফন্দি

প্রকাশিত: ০৩:১১, ১০ জুলাই ২০২৫

ইসরাইলকে বাঁচাতে আমেরিকার নতুন ফন্দি

ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্য রক্ষায় ব্যর্থ ইসরাইলকে ঘুঁচিয়ে আবারও আক্রমণাত্মক তৎপরতা শুরু করেছে দেশটির গডফাদার যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধের পর নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ হয়ে পড়েছে নেতানিয়াহুর প্রশাসনের। অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে আয়াতুল্লাহ খামেনির নেতৃত্বাধীন ইরান। চীন ও রাশিয়ার মতো পরাশক্তিদের মিত্রতা পেয়ে পশ্চিমা প্রভাব এখন মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে।

মার্কিন সামরিক নির্মাণে ইসরাইলে ব্যস্ততা

মিডল ইস্টভিত্তিক একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে সম্ভাব্য আরেকটি বড় সংঘাতের প্রস্তুতি নিতে ইসরাইলে অন্তত ২০টি সামরিক প্রকল্প চালু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরমধ্যে রয়েছে বিমানঘাঁটি, অস্ত্র কারখানা, যুদ্ধবিমান ও ট্যাংক রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র, এবং বোয়িং কেসি ট্যাঙ্কার সংরক্ষণের বিশেষ অবকাঠামো।

প্রাথমিকভাবে এসব প্রকল্পে ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হলেও, মোট ব্যয় ছাড়িয়ে যেতে পারে এক বিলিয়ন ডলার। মার্কিন ঠিকাদারদের মাধ্যমে এসব অবকাঠামো নির্মাণ করছে পেন্টাগন। যুদ্ধবিমান জ্বালানি সরবরাহ, সামরিক সরঞ্জাম মজুদ ও মেরামতের সুযোগ থাকছে এসব ঘাঁটিতে।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সামরিক সহায়তা পায় ইসরাইল

বার্ষিক ভিত্তিতে ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩.৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা পায়। এর বাইরে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র আরও ১৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সহায়তা দিয়েছে নেতানিয়াহুর প্রশাসনকে। এছাড়াও নেভাতিম বিমানঘাঁটি ও গোপন সামরিক স্থাপনা ‘নাইন ওয়ান ওয়ান’-এ যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই স্থাপন করেছে নানা ধরণের সামরিক প্রযুক্তি ও অস্ত্র।

তবু ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের কাছে ধসে পড়ে ইসরাইল

মারাত্মক সামরিক প্রস্তুতি, প্রযুক্তি ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা সত্ত্বেও মাত্র ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের কাছে পুরোপুরি ধরাশায়ী হয় ইসরাইল। আকস্মিক হামলার কৌশলও কাজে আসেনি। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-র ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরাইলের অস্ত্রভাণ্ডার প্রায় ফুরিয়ে আসে।

যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের পরিণতি

এত বড় পরাজয়ের পর ইসরাইল হয়ে উঠেছে মার্কিন আধিপত্য টিকিয়ে রাখার শেষ লড়াইয়ের মঞ্চ। তবে হুথিদের হামলায় মধ্যপ্রাচ্যের নৌরুটে পশ্চিমা শক্তির চলাফেরা হুমকির মুখে পড়েছে। রাশিয়ার পর ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনও এখন মধ্যপ্রাচ্যে সরাসরি তৎপরতায় নেমে পড়েছে। অন্যদিকে, ইরানের ক্রমবর্ধমান শক্তি ও জনপ্রিয়তা দেখে অঞ্চলটির অন্য কোনো দেশ আর প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ঘাঁটি ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে না।

সব মিলিয়ে, ইরানের মোকাবেলায় ইসরাইলে মরিয়া হয়ে সামরিকভাবে হাজির হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে— ইসরাইলকে সামনে রেখে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এই আধিপত্য রক্ষা আদৌ সম্ভব হবে কি না?

 

শেখ ফরিদ 

×