
ছবি আলজাজিরা
গাজা উপত্যকায় তীব্র খাদ্যসংকটের মধ্যে নতুন করে মানবিক সাহায্য বিতরণের সময় একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৯ মে) কেন্দ্রীয় গাজায় একটি নবনির্মিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে বিস্ফোরণ হয়, যেখানে শত শত ফিলিস্তিনি খাবারের জন্য জড়ো হয়েছিলেন। একই দিনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭০ জন।
খবরে জানা যায়, কেন্দ্রীয় গাজার খান ইউনিসে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত Gaza Humanitarian Foundation-এর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে এই বিস্ফোরণ ঘটে। ত্রাণ পাওয়ার আশায় জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয় আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা।
জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, “ক্ষুধা প্রতিরোধের জন্য সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।” তারা বলছে, খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসেবার অভাবে গাজাবাসীদের জীবন এখন মৃত্যুর দোলনায়।
এদিন গাজার গাজা সিটির আস-সারায়া জংশনের কাছে ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত হন ৯ জন। এছাড়া সারা গাজায় বিভিন্ন হামলায় মোট ৭০ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৫৪,২৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১,২৩,৪৯২ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে, গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও হাজার হাজার নিখোঁজ ব্যক্তি রয়েছেন এবং এ পর্যন্ত প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়ে গেছে।
ইসরায়েলি সরকার সম্প্রতি পশ্চিম তীরে একসঙ্গে ২২টি অবৈধ ইহুদি বসতি অনুমোদন দিয়েছে, যা ইতিহাসে একবারে সর্ববৃহৎ অনুমোদন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই সহিংসতাকে “মানবতাবিরোধী এবং অমানবিক আচরণ” হিসেবে আখ্যায়িত করছে। তারা বলছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের মৌলিক মানবিক অধিকার লঙ্ঘন করছে—বিশেষ করে খাদ্য, পানি ও আশ্রয়ের অধিকারে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনের বেশি বন্দী হন। সেই ঘটনার পর থেকেই ইসরায়েল গাজার ওপর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে, যা এখন চরম মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হয়েছে।
এসএফ