শনিবার রাত থেকে টানা ভারী বর্ষণে ময়মনসিংহ নগরীতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নগরীর সবকটি সড়ক তলিয়ে গেছে নোংরা ও ময়লাযুক্ত পানিতে। আবাসিক বাসাবাড়ি, দোকানপাট, কাঁচাবাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়েছে ময়লাযুক্ত পানি।
রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ময়মনসিংহে ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
শনিবার রাত থেকে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ হলেও, রবিবার ভোর থেকে শুরু হয় টানা বর্ষণ। এর প্রভাবে নগরীর পুরোহিতপাড়া, ব্রাহ্মপল্লী, বাঘমারা, আর কে মিশন রোড, বলাশপুর, চরপাড়া, নওমহল, সানকিপাড়া, আউটার স্টেডিয়ামসহ সব এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
এ সময় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন অফিসগামী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমজীবী মানুষ। জীবন-জীবিকার তাগিদে যারা রাস্তায় বের হয়েছিলেন, তাদের দুর্ভোগের সীমা ছিল না।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, সিটি কর্তৃপক্ষের দায়সারা ড্রেন পরিষ্কার ও অব্যবস্থাপনার কারণেই নগরবাসীকে এই ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
গৃহবধূ শামীমা আক্তার জানান, রোগী নিয়ে তিনি ভোরবেলা ময়মনসিংহ শহরে এসে চরম ভোগান্তির শিকার হন। রিকশা না পাওয়ায় তাকে বই ও বৃদ্ধ মাকে পাঁজাকোলে করে বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিতে হয়েছে।
গ্রামাঞ্চলের গৃহবধূ হোসনা আরা জানান, বৃষ্টির কারণে তার বাসার নিচতলার রান্নাঘর ও বেডরুমে ময়লাযুক্ত পানি ঢুকে পড়ে এবং আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যায়।
সব সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় রিকশা ও ইজিবাইকসহ অনেক গণপরিবহন যাত্রী পরিবহন করতে চাননি। আর যারা রাজি হয়েছেন, তারা নিয়েছেন দ্বিগুণ ভাড়া।
বেসরকারি চাকরিজীবী সিরাজুল ইসলাম জানান, চরপাড়া মোড় থেকে রেলস্টেশন পর্যন্ত রিকশাভাড়া চাওয়া হয়েছে ১০০ টাকা, যেখানে সাধারণত সর্বোচ্চ ৫০ টাকা।
নগরবাসীরা বলেন, নগরীর ড্রেন ও খালে পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের সক্ষমতা নেই। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেও দীর্ঘ সময় ধরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। অথচ সিটি কর্তৃপক্ষ জলাবদ্ধতা নিরসনে শত কোটি টাকার বেশি ব্যয় করেছে। খাল পরিষ্কার ও বহু ড্রেন নির্মাণ করা হলেও এর সুফল পাচ্ছেন না নগরবাসী।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোখতার আহমেদ জানান, “জলাবদ্ধতা নিরসনের পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে নগরবাসীকে আর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।”
সজিব
