গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বুদ্ধিমন্ত সরকার হত্যার লোমহর্ষক রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে।পুলিশ হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত হত্যাকারী তারই ভাইপো লিংকন সরকার ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) ড. মো. রুহুল আমিন সরকার। সংবাদ সম্মেলনে কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ ও ইন্সপেক্টর বিধান কুমার চন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন সরকার বলেন, বুদ্ধিমন্ত সরকার (৭০) পিতা- মৃত কুটিশ্বর সরকারের তিন ভাইয়ের পৈত্তিক সম্পত্তি বিআরএস রেকর্ডে ২০ শতাংশ জমি বুদ্ধিমন্ত সরকারের নামে বেশি রেকর্ড হওয়ায় ভাইদের মধ্যে পারিবারিকভাবে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। বুদ্ধিমন্ত সরকার একজন হিন্দু সাধু বা সাধক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি সনাতন ধর্ম সংক্রান্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিতে বক্তব্য দিতেন। এর ফলে তার হত্যাকাণ্ড এক ধরনের সাম্প্রদায়িক সংঘাত বলে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছিল একদল কুচক্রী মহল। এ হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে সামাজিক স্থিতিশীলতা বিনষ্টের প্রয়াস নিচ্ছিল।
ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করে জানা যায়, লিংকন সরকার এর পিতা বিনয় সরকারের নিকট হতে বুদ্ধিমন্ত সরকার ২০০০০/- টাকা ধার নেয়। অতিরিক্ত জমি ফেরত ও পাওনা টাকা চাইতে গেলে না দেয়ায় তাদের মধ্যে মনমালিন্য ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে গত ২৯ মে রাত আনুমানিক ৮ টায় বুদ্ধিমন্ত সরকার রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির পাশে ধানের গোলাঘর পাহারা দেয়ার জন্য গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ভিকটিম ঘুমন্ত অবস্থায় থাকাকালীন আসামী লিংকন সরকার বুদ্ধিমন্ত সরকারের মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করে গামছা দিয়ে মুখে চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে তার মৃতদেহ টেনে পাশের পাটক্ষেতে নিয়ে দা দিয়ে তার দু' পা কেটে ফেলে। পরে শরীরের বিভিন্ন অংশ বস্তাবন্দি করে রামশীল বাজারের সুইচগেটের উত্তর পশ্চিম পাশে নদীতে ফেলে দেয়।
কোটালীপাড়া থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে গত ১ জুন সন্ধ্যার পরে আসামী লিংকন সরকারকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে হত্যাকারীর স্বীকারোক্তি মতে অদ্য তারিখ সকালে শত শত মানুষের সামনে মৃতের জুতা, দা, পাঞ্জাবি, গামছা দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় পাশের ধান ক্ষেতের ড্রেনের মধ্য হতে উদ্ধার করে জব্দতালিকা মূলে জব্দ করেন।
রাজু
