ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৮ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গাজায় ইসরাইলি হামলা চলছেই

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৪৫, ২৭ মে ২০২৫

গাজায় ইসরাইলি হামলা চলছেই

গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের পরও হামলা অব্যাহত  রেখেছে ইসরাইল

গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের পরও হামলা অব্যাহত  রেখেছে ইসরাইল। হামাস প্রস্তাব মেনে নিলেও ইসরাইল এতে সায় দেয়নি। সোমবার রাতভর ও মঙ্গলবার ভোরে উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় ইসরাইলি সৈন্যরা। এতে শিশু ও নারীসহ অন্তত ৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
জেরুজালেমে পবিত্র আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে মুসলিমদের বেধড়ক পিটিয়েছে ইহুদিরা। সোমবার কট্টর ডানপন্থি ইসরাইলিরা হঠাৎ আল-আকসা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে মুসলিম মুসল্লিদের পেটাতে থাকে। এ সময় তারা জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) কার্যালয়েও ঢুকে আগ্রাসী আচরণ করে। জেরুজালেম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মিছিল থেকে এ ঘটনা ঘটে। জেরুজালেমের পুরানো শহরের অলিগলি ও মুসলিম অধ্যুষিত এলাকার ভেতর দিয়ে মিছিল করার সময় কিছু ইসরাইলি ‘আরবদের মৃত্যু হোক’ ও ‘তোমাদের গ্রাম জ্বলে যাক’ বলে স্লোগান দেয়। খবর আলজাজিরা ও বিবিসি অনলাইনের।  
১৯৬৭ সালে ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে। তখন থেকে শহরটি ইসরাইলি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রতি বছর ইসরাইলে ২৬ মে জেরুজালেম দিবস হিসেবে উদ্যাপন করা হয়, যা একটি বার্ষিক ছুটির দিন। এই দিনের স্মরণে প্রতিবছর একটি মিছিল বের করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে আগেভাগেই শত শত সশস্ত্র পুলিশ ও সীমান্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কারণ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা নিয়মিত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকার দোকানপাট ও ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা, নিপীড়ন ও হয়রানি করে। বসতি স্থাপনকারীরা অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের বিভিন্ন বসতি ও ফাঁড়িতে বসবাস করে, যা আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ।
সোমবারও একদল ইসরাইলি তরুণ ফিলিস্তিনি দোকানদার, পথচারী, স্কুলগামী শিশু, এমনকি ইসরাইলি মানবাধিকারকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে বিবাদে জড়ায়। তারা লোকজনের গায়ে থুতু ছিটায়, গালাগাল করে ও জোরপূর্বক ঘরে ঢোকার চেষ্টা চালায়। তাদের অনেকের হাতেই এ সময় ইসরাইলি পতাকা ছিল। ঘটনাস্থলে থাকা এক সাংবাদিক বলেন, এ সময় পুলিশ অন্তত দুই যুবককে আটক করে। মিছিলকারীদের একটি ছোট দল পূর্ব জেরুজালেমে ইউএনআরডব্লিউএর কার্যালয়ের প্রাঙ্গণেও ঢুকে পড়ে। এ দলে একজন ইসরাইলি সংসদ সদস্যও ছিলেন।
ইসরাইল ইউএনআরডব্লিউএকে দেশটি ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখ-ে নিষিদ্ধ করেছে। ফলে গাজায় সংস্থাটির ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে চলা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
গাজায় মার্কিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, তারা ‘জীবিত এবং মৃত’ সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনতে হামলা আরও জোরদার করবে। 
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ৭০ দিনের গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দেওয়ার পর এ মন্তব্য করেন নেতানিয়াহু। ওই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ১০ ইসরাইলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ইসরাইলের কারাগার থেকে আরও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার  কথা ছিল।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে গাজায় অভিযান আরও জোরদার করেছে ইসরাইল। ইসরাইলের কয়েকমাস ধরে চলা অবরোধের কারণে ফিলিস্তিনি ভূখ-টিতে তীব্র খাদ্য ও ওষুধের সংকটের মধ্যে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল ত্রাণ প্রবেশ করতে দিয়েছে ইহুদি রাষ্ট্রটি। এ নিয়ে তারা আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনার মুখে পড়েছে। এর মধ্যেই জিম্মিদের মুক্ত করার বিষয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আজ না পারলে কাল, কাল না পারলে পরশু। আমরা থামব না। আমরা সবাইকে ফিরিয়ে আনব, জীবিতদের এবং মৃতদের।’

×