
ছবিঃ সংগৃহীত
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথমবারের মতো জার্মানি বিদেশে স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েন করেছে। বৃহস্পতিবার লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জার্মানির ৪৫তম সাঁজোয়া ব্রিগেডের (Armoured Brigade) আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
লিথুয়ানিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়েছে, এটি শুধু জার্মানি ও লিথুয়ানিয়ার মধ্যকার নয়, বরং গোটা ইউরোপ ও ন্যাটোর নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ক্রিস্টোফ হুবার বলেন, “এই ব্রিগেড শুধু লিথুয়ানিয়ার জন্য নয়, গোটা ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য কাজ করবে।”
লিথুয়ানিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ডোভিলে শাকালিয়েনে বলেন, “জার্মান সেনারা শুধু আমাদের মাটিতে আসেনি, তারা এসেছে স্বাধীনতা ও মৈত্রীর প্রতিরক্ষায়। এটি নেতৃত্বের এক বিরল দৃষ্টান্ত।”
বর্তমানে প্রায় ৫০০ জন জার্মান সেনা লিথুয়ানিয়ায় অবস্থান করছে, এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে তা বাড়িয়ে ৫,০০০ জন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ব্রিগেডটি পূর্ণ সক্ষমতায় পৌঁছাবে ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ, যাতে থাকবে তিনটি কৌশলগত ব্যাটালিয়ন, সহায়তাকারী ইউনিট এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিকস।
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর ইউরোপজুড়ে সামরিক প্রস্তুতি ও প্রতিরক্ষা খরচ অনেক গুণ বেড়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে তার সরকার ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রচলিত সেনাবাহিনী গড়ে তুলবে।
লিথুয়ানিয়া, যা রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদ ও বেলারুশের সীমান্তবর্তী, শুরু থেকেই ইউক্রেনের কণ্ঠস্বর হিসেবে বিশ্বমঞ্চে সক্রিয়। প্রতিরক্ষা বাজেটে জিডিপির বড় অংশ ব্যয় করে দেশটি ন্যাটো সদস্যদের মধ্যে অন্যতম শীর্ষে।
শাকালিয়েনে আরও বলেন, “আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, জার্মান সেনারা যেন এখানে নিজের বাড়ির মতো অনুভব করতে পারে— তার জন্য প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা আমরা নিশ্চিত করব।”
এই সিদ্ধান্ত শুধু দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতাকেই তুলে ধরছে না, বরং যুদ্ধক্লান্ত ইউরোপে নতুন করে নিরাপত্তা ও সহযোগিতার বার্তাও দিচ্ছে।
মারিয়া