
ছবি: সংগৃহীত
১২ বছর বয়সী এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে, সে নাকি একটি চিপসের প্যাকেট চুরি করার অভিযোগে অপমানিত হয়ে কীটনাশক পান করেছিল। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া থানার অন্তর্গত গোসাইবাজার এলাকায় — শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
মৃত কিশোর, কৃষ্ণেন্দু দাস, সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সে চিপস কেনার জন্য দোকানে গিয়েছিল। দোকানদার শুভঙ্কর দীক্ষিতকে না পেয়ে বারবার ডাক দেয় – "কাকু, আমি চিপস কিনবো", কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে অবশেষে একটি চিপসের প্যাকেট হাতে নিয়ে দোকান ছেড়ে বেরিয়ে আসে। এমনটাই জানানো হয়েছে কৃষ্ণেন্দুর শোকসন্তপ্ত মায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, দোকানদার কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে কৃষ্ণেন্দুকে ধরে ফেলে, জনসমক্ষে চড় মারেন এবং শাস্তিস্বরূপ উঠ-বস করান। এই ঘটনার পর কৃষ্ণেন্দুর মা-কে ডেকে আনা হয় এবং তিনিও ছেলেকে বকাঝকা ও চড় মারেন। ছেলেটি জানায়, দোকানের সামনের ভাঙা প্যাকেটের স্তূপ থেকে সে একটি চিপসের প্যাকেট পেয়েছিল এবং পরে এসে দাম দিত। সে ক্ষমা চেয়ে তখনই টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়, কিন্তু দোকানদার তাকে মিথ্যাবাদী বলে অপমান করেন।
এরপর কৃষ্ণেন্দু রাগ ও লজ্জায় মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরে গিয়ে নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করেও দরজা না খোলায় মা ও প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে দেখেন, কৃষ্ণেন্দু মাটিতে পড়ে আছে, মুখে ফেনা ও পাশে আধখালি কীটনাশকের বোতল পড়ে রয়েছে। তার পাশে লেখা একটি চিরকুটও পাওয়া যায়, যা বাংলা ভাষায় লেখা ছিল।
চিরকুটে লেখা ছিল:
“মা, আমি চোর না। আমি চুরি করিনি। দোকানদার কাকু তখন দোকানে ছিল না, আমি অপেক্ষা করছিলাম। ফেরার সময় রাস্তায় একটি কুরকুরের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখি, ওটাই তুলে নিই। আমি কুরকুরে খুব ভালোবাসি।
এই আমার শেষ কথা। এই কাজটার (কীটনাশক খাওয়া) জন্য আমায় ক্ষমা করো।”
কৃষ্ণেন্দুকে দ্রুত তমলুক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং আইসিইউতে ভর্তি করা হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
প্রথমে দোকানদার দাবি করেন, তিনি কৃষ্ণেন্দুকে মারেননি। তবে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ার পর তাঁর দোকান বন্ধ পাওয়া যায় এবং সেখানে লোকজন জড়ো হতে থাকেন। এরপর থেকেই তিনি পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সূত্র: এনডিটিভি
এএইচএ