ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

জাতিসংঘ সতর্ক করলো: ফিলিস্তিনে ঘটতে পারে ‘আরেকটি নাকবা’

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১০ মে ২০২৫

জাতিসংঘ সতর্ক করলো: ফিলিস্তিনে ঘটতে পারে ‘আরেকটি নাকবা’

ছবি আলজাজিরা

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা, অবরোধ ও জবরদখল পরিস্থিতিকে ‘আরেকটি নাকবা’র সূচনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘের এক বিশেষ কমিটি।

৯ মে, ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কমিটি বলেছে, “বিশ্ব হয়তো আরেকটি নাকবার প্রত্যক্ষদর্শী হতে চলেছে।” ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার সময় যেমন ৭ লক্ষ ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে উৎখাত করা হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতিও তেমনই ব্যাপক জবরদখল ও গণচাপিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

‘নির্বিচার নিপীড়ন ও জাতিগত নির্মূলের চেষ্টা’
জাতিসংঘ কমিটির ভাষ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল বর্তমানে ফিলিস্তিনিদের ওপর “অচিন্তনীয় নিপীড়ন” চালাচ্ছে এবং তাদের ভূমি কুক্ষিগত করে একটি বৃহত্তর ঔপনিবেশিক সম্প্রসারণে মনোযোগ দিচ্ছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “ইসরায়েলি সরকার নিরাপত্তা অভিযানের নামে ভূমি দখল, গৃহধ্বংস, জোরপূর্বক উচ্ছেদ ও জাতিগত নির্মূল চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে ফিলিস্তিনিদের বসতি ধ্বংস করে সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপন করা যায়।”

কমিটির ভাষ্য মতে, ইসরায়েলের লক্ষ্য হচ্ছে “দখলকৃত ভূমিতে ফিলিস্তিনিদের বসবাস অসম্ভব করে তোলা।”

‘অমানবিক ও লাঞ্ছনাকর আচরণ’
কমিটির রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে আটক ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন চালায়, যা অনেক সময় যৌন নিপীড়ন পর্যন্ত গড়ায়।

“বন্দিশিবিরগুলোতে যে নির্যাতনের কথা শুনেছি, তা যেন মানবিক মর্যাদাকে সম্পূর্ণ পদদলিত করার একমাত্রিক কৌশল,” বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

গাজার দিকে সহায়তা রুদ্ধ, ক্ষুধার অস্ত্র ব্যবহার
ইসরায়েলের পূর্ণ অবরোধে গাজা উপত্যকা বর্তমানে মারাত্মক খাদ্য সংকটে। জাতিসংঘ কমিটি বলেছে, “একটি রাষ্ট্র কীভাবে এই ধরনের নীতিমালা গ্রহণ করতে পারে—যেখানে কয়েক কিলোমিটার দূরে খাদ্যসামগ্রী বোঝাই ট্রাক থেমে আছে অথচ জনগণকে না খাইয়ে মারা হচ্ছে—তা কল্পনাও কঠিন।”

আরও উদ্বেগ: গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ পরিকল্পনা
ইসরায়েল সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে কয়েক লক্ষ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক সরিয়ে ছয়টি অস্থায়ী ক্যাম্পে পাঠানো হবে। জাতিসংঘের ভাষ্য মতে, এটি “ঐতিহাসিক নাকবারই আধুনিক পুনরাবৃত্তি।”


জাতিসংঘের এই বিশেষ কমিটি গঠিত হয়েছিল ১৯৬৮ সালে। বর্তমানে এর সদস্য দেশ হলো শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও সেনেগাল।

এসএফ 

×