
ছবি: প্রতীকী
ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে যখন ভারতীয় গণমাধ্যমের বড় একটি অংশ উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রোপাগান্ডায় মত্ত, তখন স্বতন্ত্রভাবে সত্য উদঘাটনের চেষ্টার মূল্য দিতে হলো ‘The Wire’ নামের একটি প্রগতিশীল অনলাইন গণমাধ্যমকে।
পাকিস্তানি গণমাধ্যম দ্য ডন জানায়, যুদ্ধোন্মাদনায় অন্ধ হয়ে থাকা অন্যান্য মিডিয়ার বিপরীতে ‘The Wire’ পাকিস্তান সংক্রান্ত ঘটনার বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধান ও সরকারের দাবির সত্যতা যাচাইয়ের প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছিল। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তাতে অসন্তুষ্ট হয়ে শেষ পর্যন্ত এই সংবাদমাধ্যমটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
বলা হচ্ছে, সরকারের জনপ্রিয় বর্ণনার বিপরীতে ভিন্নতর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরাই ছিল এ নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ। বিশেষ করে ভারতের যুদ্ধবিমানের ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রতিক্রিয়াশীল সামরিক অভিযানের ফলাফল নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যখন প্রশ্ন উঠছে, ঠিক তখনই ‘The Wire’ সেই বিতর্কিত ঘটনাগুলোর নেপথ্যে থাকা তথ্য খোঁজার চেষ্টা করছিল।
এই পদক্ষেপকে ভারতের স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য এক অশনি সংকেত হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, রাষ্ট্রীয় বয়ানকে চ্যালেঞ্জ জানানো এবং অপর পক্ষের মানবিক দিক তুলে ধরা আজ ভারতীয় সাংবাদিকতার জন্য একটি ঝুঁকিপূর্ণ কর্মকাণ্ডে পরিণত হয়েছে।
জার্মান ভিত্তিক ফ্রিডরিশ নাউম্যান ফাউন্ডেশনের ‘Conflict-Sensitive Reporting’ হ্যান্ডবুকে যেমন বলা হয়েছে, সংঘাতকালে সাংবাদিকতার দায়িত্ব হচ্ছে ভুল ধারণা সংশোধন ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার সেতুবন্ধন তৈরি করা। কিন্তু ভারতের মিডিয়া আজ সেই দায়িত্ব পালনের বদলে সংঘাতকে উসকে দিতে এবং রাষ্ট্রীয় বর্ণনাকে অন্ধভাবে সমর্থন করতে ব্যস্ত।
এই প্রেক্ষাপটে ‘The Wire’ এর মতো স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বরের দমন গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
সূত্র: দ্য ডন
রাকিব