
ছবি: প্রতীকী
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার পটভূমিতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের একাংশ ‘যুদ্ধোন্মাদনা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারে’ লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক ডন।
পত্রিকাটির মতে, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তথ্যই প্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম শুধু সত্যকে এড়িয়ে যাচ্ছে না, বরং তা চূর্ণবিচূর্ণ করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ‘ডন’ এর প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক দিনে ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তান সম্পর্কে যেসব খবর প্রচার হয়েছে, তা ‘অবিশ্বাস্য থেকে পাগলামির পর্যায়ে’ পৌঁছেছে।
‘ডন’ দাবি করছে, ইতোমধ্যে ভারতীয় মিডিয়ায় এবং কয়েকজন ভারতীয় বেশ কিছু ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক’ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ‘ডন’ ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত যেসব প্রতিবেদনকে ‘বিভ্রান্তিমূলক’ দাবি করেছে-
- করাচি বন্দর ধ্বংস করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী
- সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে (Times Now, এবিপি বাংলা)
- ইসলামাবাদে হামলা চালিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে ‘সেফ হাউজে’ সরানো হয়েছে (Republic)
- পাকিস্তানের একটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছে (India Today)
- পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একজন পাইলটকে আটক করা হয়েছে (Republic)
ডন দাবি করেছে, এসব খবরের কোনোটিরই বাস্তব ভিত্তি নেই। বরং এসব ‘মিথ্যা ও উসকানিমূলক’ প্রচারের পেছনে ভারতীয় মিডিয়ার উদ্দেশ্য হলো জনগণের মাঝে যুদ্ধ নিয়ে উন্মাদনা ছড়ানো ও বিজেপি সরকারের অবস্থানকে শক্তিশালী করা।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ভারতীয় মিডিয়া যে শুধু সরকারি প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে তাই নয়, বরং অনেক তথাকথিত ‘প্রগতিশীল’ কণ্ঠও এই মিথ্যাচারে সঙ্গী হয়েছে। পাকিস্তানি পক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, এর পেছনে রেটিং বাড়ানো কিংবা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মুখ রক্ষার কৌশল কাজ করছে। বিশেষ করে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একাধিক যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবরে চাপে পড়েছে সরকার এবং মিডিয়া—যার প্রেক্ষিতে উল্টো প্রপাগান্ডা আরও জোরদার করা হচ্ছে।
ডন আরও অভিযোগ করেছে, ভারতে যারা এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলছে, তাদেরও দমন করা হচ্ছে। ‘দ্য ওয়্যার’-এর মতো সংবাদমাধ্যম, যারা যুদ্ধবাজ বিবৃতির বাইরে গিয়ে সত্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত সরকার।
সংবাদপত্রটি শেষ পর্যন্ত সতর্ক করেছে, সাংবাদিকতার মূল ভিত্তি হলো সত্য এবং দ্বিপাক্ষিক পরিস্থিতিতে উসকানি নয় বরং শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ দেখানো। পাকিস্তানি দৈনিকটির ভাষ্য অনুযায়ী, যুদ্ধপ্রবণ এই প্রচার কৌশল শুধু আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে না, বরং ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
সূত্র: দ্য ডন
রাকিব