ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

গাজায় যুদ্ধ সম্প্রসারণে লক্ষাধিক রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা ইসরায়েলে

প্রকাশিত: ০৩:০৬, ৫ মে ২০২৫

গাজায় যুদ্ধ সম্প্রসারণে লক্ষাধিক রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা ইসরায়েলে

৪ মে, ২০২৫ তারিখে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলা থেকে ধোঁয়া উড়ছে, যা দক্ষিণ ইসরায়েল থেকে দেখা যাচ্ছে

ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ আরও তীব্র করতে এবং হামাসের বিরুদ্ধে অভিযানের বিস্তৃত পরিসর নিশ্চিত করতে লক্ষাধিক রিজার্ভ সেনা ডাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

রবিবার (৪ মে) এমন ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান আইয়াল জামির।

তিনি বলেন, এই সপ্তাহে আমরা আমাদের রিজার্ভ সদস্যদের লক্ষাধিক ড্রাফট অর্ডার পাঠাচ্ছি। গাজায় আমাদের অভিযান আরও গভীর ও বিস্তৃত হবে। বন্দি ইসরায়েলিদের ফিরিয়ে আনা এবং হামাসকে পরাস্ত করাই আমাদের লক্ষ্য।

এই ঘোষণাটি আসে এমন এক সময়ে, যখন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন—যদিও ইসরায়েলের মধ্যেই যুদ্ধবিরতির পক্ষে ব্যাপক জনমত তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে বন্দি ইসরায়েলিদের মুক্তির বিনিময়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য।

অক্টোবর ২০২৩ সালে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ এখন পর্যন্ত ৫২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। যুদ্ধের ভয়াবহতায় গাজার অবকাঠামো প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস, স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিপর্যস্ত এবং ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে অধিকাংশই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

মানবিক সংকট চরমে
ইসরায়েল ২ মার্চ থেকে গাজায় সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করেছে। ফলে খাদ্য, ওষুধ ও বিদ্যুৎ সংকটে এলাকাটি ধ্বংসপ্রায়। ২৯ লাখ শিশুর অনাহারে মৃত্যুর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন মানবিক সংস্থা।

এই অবস্থায় দুটি ইসরায়েলি সরকারি সূত্র জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে গাজায় মানবিক সহায়তা পুনরায় চালুর বিষয়টিও আলোচনায় আসবে।

চরমপন্থী মন্ত্রীর ‘সম্পূর্ণ বিজয়’-এর দাবি
ইসরায়েলের চরমপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির সেনা রেডিওতে বলেন, আমরা যুদ্ধ আরও তীব্র করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য সম্পূর্ণ বিজয়। গাজায় খাদ্য ও বিদ্যুৎ সরবরাহেও বোমা ফেলতে হবে। তবে তার কথায় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

যুদ্ধবিরতির দাবি ও প্রতিরোধ
ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও যুদ্ধবিরতির পক্ষে আন্দোলন বাড়ছে। অনেক রিজার্ভ সেনাই ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না। আন্তর্জাতিক মহলে যুদ্ধের নৃশংসতা ও অবরোধের কারণে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা যুদ্ধ বন্ধ করে একটি টেকসই যুদ্ধবিরতির জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছে।

তবে নেতানিয়াহু প্রশাসন এখনো সেই আহ্বানে কর্ণপাত করেনি। বরং যুদ্ধের বিস্তার ঘটিয়ে পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে।

সূত্র: আলজাজিরা, এপি, রয়টার্স

এসএফ

×