কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এখনো বাকি প্রায় দুই মাস। এর মধ্যেই দেশটিতে নির্বাচনী লড়াই তীব্র হয়ে উঠেছে। আজ কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে প্রথম এবং সম্ভবত একমাত্র টেলিভিশন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। এই ঐতিহাসিক বিতর্ক দেখতে কোটি কোটি মার্কিনিসহ বিশ্ববাসীর চোখ থাকবে আজ টেলিভিশনের পর্দায়। সর্বশেষ সমীক্ষাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, ট্রাম্প এখনো প্রায় অর্ধেক ভোটারের দৃঢ় সমর্থন ধরে রেখেছেন। যদিও তিনি একজন অপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত এবং ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হারের ফলাফল বদলানোর চেষ্টায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। খবর আলজাজিরা ও সিএনএন অনলাইনের।
জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর পর প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে নামেন কমলা হ্যারিস। দ্রুত নিজেকে একজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রমাণ করেছেন। তবে জনমত জরিপে দেখা গেছে, তিনি এখনো বড় কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারেননি। ফলে নির্বাচনী লড়াই অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনা কলেজের একটি জরিপ অনুসারে, ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প জাতীয়ভাবে ৪৮ শতাংশ সমর্থন পেয়ে হ্যারিসের চেয়ে ১ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। হ্যারিস ৪৮ থেকে ৪৭ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন, যা মার্জিন অব এরর সীমার মধ্যে রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জাতীয় ভিত্তিতে বেশি ভোট বা জনপ্রিয়তা দ্বারা নির্ধারিত হয় না, বরং রাজ্যভিত্তিক ভোটের ফলাফলের মাধ্যমে হয়। ফলে কিছু নির্দিষ্ট দোদুল্যমান রাজ্যই সাধারণত ফলাফল নির্ধারণ করে। জনমত জরিপে দেখা গেছে, কমলা উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ায় সামান্য এগিয়ে আছেন। নেভাদা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও অ্যারিজোনায় ট্রাম্পের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি অবস্থানে আছেন।
সিবিএস নিউজ/ইউগভের আরেকটি জরিপ অনুসারে, হ্যারিস মিশিগান ও উইসকনসিনে ১ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে এবং পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্পের সঙ্গে সমান অবস্থানে আছেন। নির্বাচনটি ইতোমধ্যে বিশৃঙ্খল হয়ে উঠেছে। ৮১ বছর বয়সী বাইডেন তার বয়সজনিত উদ্বেগের কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান, ট্রাম্প অল্পের জন্য একটি হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে যান এবং নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজিত হলে আবারও তিনি হার স্বীকার করবেন না এমন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক জরিপের ফল ইঙ্গিত দিচ্ছে, উভয় প্রার্থীর সমর্থন প্রায় সমানভাবে ভাগ বিভক্ত হয়ে গেছে। যা নির্বাচনকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবারের বিতর্কটি একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে। কারণ এটি দুই প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র নির্ধারিত বিতর্ক। ট্রাম্পকে বিতর্কে তার সাধারণ আক্রমণাত্মক মনোভাব সংযত করতে চাপের মধ্যে থাকতে হবে। কারণ তিনি প্রথমবারের মতো একজন মিশ্র-জাতির প্রার্থীর মুখোমুখি হচ্ছেন, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে আছেন। অপরদিকে কমলাকে এই বিশাল দর্শকশ্রেণির সামনে নিজের পক্ষে সমর্থন আদায় করতে হবে, যা তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে করতে পারেননি এবং অল্প সময়ের প্রচারেও তা খুব বেশি হয়ে ওঠেনি।
৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প মার্কিন ইতিহাসের অন্যতম বয়স্ক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। ৫৯ বছর বয়সী কমলা তার প্রচারে একটি আশাবাদী ও ভবিষ্যৎমুখী বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন, যা ট্রাম্পের সংকটপূর্ণ দাবির বিপরীতে দাঁড়াচ্ছে। ট্রাম্প দাবি করছেন যে, তিনি না থাকলে দেশ পতনের মুখে পড়বে।
তবে হ্যারিসকে নীতিগত দিক থেকে অস্পষ্ট থাকার অভিযোগও মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তিনি শেষ পর্যন্ত রবিবার একটি ইশতেহারের মতো ঘোষণা প্রকাশ করেছেন, যেখানে শ্রমিক ইউনিয়ন, জীবনযাত্রার ব্যয় ও স্বাস্থ্যসেবার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। কমলা হ্যারিসকে ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের সময় কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। কারণ ট্রাম্প প্রায় প্রতিটি বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকেন এবং প্রতিপক্ষকে মানসিকভাবে উসকে দিতে ভালোবাসেন। একমাত্র বিতর্কে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় বাইডেন এই কৌশলের মোকাবিলা করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হন।
ইতোমধ্যে ট্রাম্পের বর্ণবাদী ও লিঙ্গবাদী আক্রমণের শিকার হয়েছেন এই নারী। তার নাম ভুলভাবে উচ্চারণ করে এবং তাকে ‘পাগল’ ও ‘মার্কসবাদী’ বলে কটাক্ষ করছেন ট্রাম্প। মার্কিন পরিবহনমন্ত্রী পিট বুটিজেজ বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে অংশ নিতে প্রায় অতিমানবীয় মনোযোগ ও শৃঙ্খলা প্রয়োজন।
হ্যারিসের প্রচারণা শিবির বিতর্কের পর নর্থ ক্যারোলাইনা ও পেনসিলভানিয়াসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে প্রচারাভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে ট্রাম্প শনিবার উইসকনসিনে একটি সমাবেশ করেন, যেখানে তিনি ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ‘খুনি, শিশু নিপীড়ক ও সিরিয়াল ধর্ষকদের’ আমদানি করার অভিযোগ এনে তার শ্বেতাঙ্গ, শ্রমিক শ্রেণির সমর্থকদের উদ্দেশে একটি ভাষণ দেন। ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ ঘোষণা করেছেন, তিনি পুনরায় হোয়াইট হাউসে ফিরে এলে, যারা নভেম্বরের নির্বাচনে ‘প্রতারণা’ করার পরিকল্পনা করছে তাদের জন্য কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করবেন। এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রার্থিতা নিয়ে উদ্বেগ জানানো রিপাবলিকানদের তালিকা ক্রমাগত দীর্ঘ হচ্ছে।
অপরদিকে এই শিবিরে কমলা হ্যারিসের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। এই তালিকার সবশেষ সংযোজন দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি। জর্জ ডব্লিউ বুশের শাসনামলের প্রভাবশালী রিপাবলিকান নেতা ডিক চেনি সাফ বলেন, আমরা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করতে পারি না। ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমরা এই নারীকে ভোট দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি। কারণ ট্রাম্প রিপাবলিকানদের জন্য হুমকি। ডিক চেনির মেয়ে এবং সাবেক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা লিজ চেনিও এর আগে টেক্সাসে এক অনুষ্ঠানে বলেন, তার বাবা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। ডিক চেনি বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) নিজেকে ক্ষমতায় বহাল রাখতে মিথ্যা এবং সহিংসতার মধ্য দিয়ে গত নির্বাচনের ফল চুরি করতে চেয়েছিলেন। আবারও তাকে ক্ষমতায় বসানোর মতো ভরসা কখনোই করা যায় না।
রিপাবলিকান এ নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের সংবিধানের সুরক্ষার জন্য দেশকে দলমতের ঊর্ধ্বে রাখাটা নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব। এ কারণে আমি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে আমার ভোট দেব। বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের প্রচার শিবিরের পক্ষ থেকে চেনির বক্তব্যকে স্বাগত জানানো হয়েছে। প্রচার শিবিরের চেয়ারপারসন জেন ও’ মালি ডিলন বলেন, ‘ভাইস প্রেসিডেন্ট (সাবেক) চেনির সমর্থন পেয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট (কমলা) গর্ববোধ করছেন। দেশকে দলের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়ার মতো সাহস দেখানোয় তিনি তার (চেনি) প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। লিজ চেনি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার ঘটনা তদন্তে প্রতিনিধি পরিষদ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটিতে কাজ করেছেন। ওই ঘটনার পর সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অভিশংসিত করার পক্ষে যে ১০ জন রিপাবলিকান ভোট দিয়েছিলেন, তাদের একজন লিজ চেনি। ২০২২ সালে ট্রাম্প-সমর্থিত এক প্রার্থীর কাছে প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য হিসেবে তিনি তার আসন হারান। ডিক চেনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেওয়ার পর ট্রাম্প এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান। ট্রাম্প সাবেক এই ভাইস প্রেসিডেন্টকে ‘অপ্রাসঙ্গিক রিনো’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘তিনি (ডিক চেনি) নামমাত্র রিপাবলিকান।’ ইরাক যুদ্ধে ডিক চেনির ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্প বলেছেন, ‘তিনি (চেনি) অন্তহীন, অর্থহীন যুদ্ধের রাজা।’
ঘুষের মামলায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। বিচারক জুয়ান মার্চান গতকাল শুক্রবার সাজা ঘোষণার দিন ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দেন। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা বিলম্বিত করতে আগে থেকেই নানা আইনি কৌশল অবলম্বন করছেন তার আইনজীবীরা। এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর সাজা ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়েছিল।
ব্যবসায়িক নথিপত্রে ঘুষের তথ্য গোপনের মামলায় গত মে মাসে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করেন নিউইয়র্কের জুরি। মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি গুরুতর অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্য দিয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট কিংবা সাবেক প্রেসিডেন্টকে অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এর আগে ইসরাইল ইস্যু নিয়ে কমলা হ্যারিসকে সমালোচনায় বিদ্ধ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইলের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার লাস ভেগাসে রিপাবলিকান পার্টির ইহুদিদের এক সমাবেশে সাবেক প্রেসিডেন্ট তিনি এ মন্তব্য করেন। স্যাটেলাইট ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জয়ী হলে ইসরাইলের অস্তিত্বই শেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ইসরাইল রাষ্ট্র হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের সঙ্গে যেন টিকে থাকে, তা নিশ্চিত করতে আমি কাজ করব। তবে তিনি (কমলা) প্রেসিডেন্ট হলে আপনাদের সেটি থাকবে না, ধ্বংস হয়ে যাবে। ইহুদি ভোটারদের প্রলুব্ধ করার জন্য এই মরিয়া ধরনের প্রচার নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে ট্রাম্পকে নিয়ে। তবে এর আগে তার মধ্যপ্রাচ্য নীতির কারণে ইহুদি ভোটারদের আকৃষ্ট করতে না পারায় বেশ হতাশ হয়ে পড়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট।
নিজের হতাশা প্রকাশ্যে এনে তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ইসরাইলপন্থি নীতি অনুসরণের আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও ইহুদি ভোটাররা ঝাঁকে ঝাঁকে তার শিবিরে যোগ দিচ্ছেন না। ট্রাম্প বলেন, আমি বুঝতে পারছি না যে, কেউ কীভাবে তাদের (কমলা) সমর্থন করতে পারে। ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি এটি ক্রমাগত বলি যে, যদি আপনি তাদের (কমলা) সমর্থন করেন এবং আপনি যদি ইহুদি হন, তাহলে আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে এবং এর চিকিৎসা প্রয়োজন। তারা আপনাদের প্রতি অত্যন্ত বিরূপ আচরণ করেছেন। ট্রাম্প বলেন, খোলাখুলিভাবে বলতে গেলে, চার বছরে অন্য যে কোনো প্রেসিডেন্টের চেয়ে ইসরাইলের জন্য আমি অনেক বেশি কাজ করেছি। তা সত্ত্বেও মাত্র ২৫-২৬ শতাংশ ইহুদি আমাকে ভোট দিয়েছিলেন। এ বছর আশা করছি ৫০ শতাংশ ভোট পাব। সর্বশেষ জুনে মার্কিন ইহুদিদের মধ্যে জরিপ চালানো হয়। এই জরিপেও পিছিয়ে পড়েন ট্রাম্প। তার প্রতি মাত্র ২৪ শতাংশ ইহুদি ভোটার সমর্থন দেন। এর আগে রাশিয়া কমলা হ্যারিসের জয় চায় বলে মন্তব্য করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বদলে কমলা হ্যারিসকে পছন্দ করার কারণ হিসেবে তার ‘অন্যরকম হাসির’ কথা উল্লেখ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিসকে জয়ী দেখতে চাওয়ার বিষয়ে পুতিন এই বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করেন।
রুশপন্থি প্রচার চালিয়ে নভেম্বরের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার কথিত বেআইনি পরিকল্পনার ঘটনায় রুশ গণমাধ্যমের দুই নির্বাহীকে মার্কিন বিচার বিভাগ অভিযুক্ত করার একদিন পর পুতিন এই বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করেছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী দৌড় থেকে জো বাইডেন সরে যাওয়ার আগে চলতি বছরের শুরুর দিকে পুতিন বলেছিলেন, তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে জো বাইডেনকে বেশি পছন্দ করেন। কারণ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন পুরনো স্কুলের রাজনীতিবিদ; যাকে আগেই অনুমান করা যায়। তবে মস্কো প্রকৃতপক্ষে ট্রাম্পের জয় চায় বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশ্বাস করে। কারণ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প খুব বেশি প্রতিশ্রুতিশীল নন। এখন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে কীভাবে দেখছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের একটি অর্থনৈতিক ফোরামে পুতিন বলেন, এটা আমেরিকান জনগণের পছন্দ। এর পরপরই তিনি বলেছেন, হ্যারিসের প্রতি সমর্থন দেওয়ার জন্য বাইডেন তার সমর্থকদের আহ্বান জানিয়েছেন। আমরাও তাই করব, আমরা তাকে সমর্থন করব। রুশ প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের সময় অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও পুতিন-উভয়কে হাসতে দেখা যায়।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকদের কাছ থেকেও সাধুবাদ পান তিনি। হ্যারিস সম্পর্কে নিজের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে পুতিন বলেন, তিনি অত্যন্ত খোলা মনে এবং সংক্রামকভাবে হাসেন যে, এর অর্থ তার সবকিছুই ঠিক আছে। রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট বলেন, এর অর্থ সম্ভবত তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে পরবর্তী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। বিপরীতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে অন্য যে কারও চেয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুতিন বলেন, তবে চূড়ান্ত পছন্দ আমেরিকান জনগণের। আমরা তাদের পছন্দের প্রতি শ্রদ্ধা জানাব।