
কয়লার দাম কমালে বিদ্যুৎ বিক্রির সুবিধা পাবে আদানি
আদানির মালিকানাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার দাম কমালে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে দেশটির খোলাবাজারে কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমোদন দেবে বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও আদানির মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে।
ভারতীয় এই কোম্পানির মলিকানাধীন ঝাড়খন্ড বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম নিয়ে বিরোধ রয়েছে পিডিবির সঙ্গে। সর্বশেষ গত মাসের শেষে কয়লার দাম পর্যালোচনা নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। বাংলাদেশে বিভিন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম আদানির ব্যবহৃত কয়লা থেকে অনেক কম। কেন্দ্রটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই এ দাম নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
ভারতের বাজারে আদানির ঝাড়খন্ড কেন্দ্রের বিদ্যুৎ বিক্রির সুযোগ প্রসঙ্গে পিডিবির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম গতকাল বুধবার একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আলোচনাটি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। চুক্তির বিভিন্ন ধারা পর্যালোচনা করতে হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেব আমরা।’
পিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়লার দাম পর্যালোচনায় পিডিবি দীর্ঘদিন ধরে আদানিকে অনুরোধ জানালেও কার্যকর কোনো সাড়া দেয়নি কোম্পানিটি। সর্বশেষ গত মাসের আলোচনায়ও কোনো সুরাহা হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি কয়লার দাম পর্যালোচনা সাপেক্ষে ভারতের খোলাবাজারে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হবে বলে একটি মৌখিক প্রস্তাব দেওয়া হয় পিডিবির পক্ষ থেকে। কর্মকর্তারা জানান, শীতকালে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। তখন দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটা ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। যে কারণে শীতে বাংলাদেশ থেকে নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানির আলোচনা চলছে। একই কারণে শীতে আদানি থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চাহিদাও কমে যায়। এ ছাড়া ভারত সরকার বিদ্যুৎ রপ্তানির বিধান সংশোধন করে আদানির বিদ্যুৎ দেশটির বাজারেও বিক্রির সুযোগ দিয়েছে। এখন পিডিবির প্রস্তাবে আদানি রাজি হলে আনুষ্ঠানিকতার দিকে এগোবে বাংলাদেশ।
গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সর্ম্পক অবনতি হওয়া শুরু হয়। কমে আসে বাণিজ্যিক লেনদেন। এ অবস্থায় গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে শতভাগ রপ্তানির জন্য নির্মিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ভারতেও বিক্রির সুযোগ রেখে বিদ্যুৎ রপ্তানি বিধি সংশোধন করে ভারত সরকার। কয়লাভিত্তিক ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির অবস্থান ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডে।
তাসমিম