
ছবি: জনকণ্ঠ
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বা পিসিওএস (PCOS) এখন বাংলাদেশের তরুণী ও প্রজননক্ষম নারীদের মধ্যে একটি ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে উঠেছে। অসচেতনতা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এই অসুখের প্রধান কারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে অন্তত ১ জন কোনো না কোনোভাবে এই রোগে আক্রান্ত।
কি এই PCOS?
PCOS হলো একধরনের হরমোনজনিত সমস্যা, যেখানে ডিম্বাশয়ে ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয় এবং অনিয়মিত ঋতুস্রাব, অতিরিক্ত মুখে লোম, ব্রণ ও ওজন বৃদ্ধি দেখা দেয়। অনেক সময় এটি সন্তান ধারণে জটিলতা তৈরি করে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের এমডি ডা. ফরিদউদ্দিন বলেন, “PCOS একটি বহুমাত্রিক সমস্যা। এটি শুধু ঋতুচক্র নয়, নারীর মানসিক স্বাস্থ্য, ওজন ও ভবিষ্যৎ মাতৃত্ব—সবকিছুর উপর প্রভাব ফেলে।”
তিনি আরও বলেন, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন, যেমন অত্যধিক জাঙ্ক ফুড খাওয়া, অনিয়মিত ঘুম এবং শরীরচর্চার অভাব—এই রোগের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম।
শহর-গ্রাম উভয়েই ঝুঁকিতে
এক সময় শহরকেন্দ্রিক সমস্যা মনে করা হলেও, বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের নারীদের মধ্যেও PCOS এর হার বাড়ছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন।
১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থী সাদিয়া (ছদ্মনাম) বলেন, “প্রথমে ঋতুচক্র অনিয়মিত হয়ে যায়। পরে মুখে ব্রণ আর অতিরিক্ত লোম দেখে চিন্তায় পড়ে যাই। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বুঝি, আমি PCOS-এ আক্রান্ত।”
চিকিৎসা ও করণীয়:
PCOS-এর নির্দিষ্ট কোনো স্থায়ী চিকিৎসা নেই, তবে নিয়মিত চিকিৎসা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং শরীরচর্চার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
এন্ডোক্রাইনোলজিস্টরা পরামর্শ দিচ্ছেন, প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, চিনি ও কার্বোহাইড্রেট কম খাওয়া এবং মানসিক চাপ কমানোর অভ্যাস এই রোগ মোকাবেলায় সহায়ক।
PCOS নিয়ে দেশের নারীদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি। স্কুল-কলেজে স্বাস্থ্যশিক্ষার অংশ হিসেবে এই বিষয়ে আলোকপাত করলে কিশোরী বয়সেই সচেতনতা তৈরি হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
মুমু ২