ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রান্নার পর গরম করলেই বিষ! এই খাবারগুলো শরীরের জন্য নীরব ঘাতক

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২৮ মে ২০২৫; আপডেট: ০৬:১৪, ২৮ মে ২০২৫

রান্নার পর গরম করলেই বিষ! এই খাবারগুলো শরীরের জন্য নীরব ঘাতক

ছবি: সংগৃহীত

নগরজীবনের ব্যস্ত রুটিনে একবেলায় রান্না করে সারাদিন তা গরম করে খাওয়া অনেকের জন্যই স্বাভাবিক অভ্যাস। অফিসে টিফিন নিয়ে যাওয়া হোক কিংবা রাতের খাবার আবার সকালে গরম করে খাওয়া—এসব যেন আধুনিক জীবনের অংশ। কিন্তু আপনি জানেন কি, কিছু খাবার দ্বিতীয়বার গরম করলেই তা হতে পারে শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর?

চলুন জেনে নিই এমন সাতটি পরিচিত খাবার, যেগুলো ভুল করেও দ্বিতীয়বার গরম করা উচিত নয়:

১. চা: জনপ্রিয় পানীয়, কিন্তু গরম নয় দ্বিতীয়বার
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয় চা। কিন্তু একবার ঠান্ডা হয়ে গেলে অনেকেই তা আবার গরম করে খান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি অত্যন্ত ক্ষতিকর। দ্বিতীয়বার গরম চায়ে অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়, যা হজমের সমস্যা, পাকস্থলীর অস্বস্তি এবং গ্যাসট্রিকের কারণ হতে পারে।

২. আলু: রান্না করা আলু মানেই সতর্কতা
আলু প্রায় প্রতিটি রান্নার অংশ। কিন্তু রান্না করা আলু যদি দীর্ঘ সময় কক্ষতাপমাত্রায় রাখা হয় এবং পরে আবার গরম করা হয়, তবে তা বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে। এতে পুষ্টিমান হ্রাস পায় এবং ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে, যা শরীরের জন্য বিপজ্জনক।

৩. ডিম: প্রোটিনের উৎস, কিন্তু দ্বিতীয়বার নয়
ডিম প্রোটিনের পাওয়ার হাউস হলেও এটি দ্বিতীয়বার গরম করলে তার পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত তাপে গরম করা ডিমে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে সিদ্ধ বা ভাজা ডিম পুনরায় গরম করা উচিত নয়।

৪. পালং শাক: আয়রনসমৃদ্ধ সবজি, গরমে অক্সিডাইজড
পালং শাকে প্রচুর আয়রন থাকে, যা শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু রান্না করা পালং শাক দ্বিতীয়বার গরম করলে সেই আয়রন অক্সিডাইজ হয়ে শরীরে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। এটি দেহে ফ্রি র‍্যাডিক্যাল তৈরি করে, যা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।

৫. ভাত: সহজ খাবার, কঠিন বিপদ
ভাত যদি দ্রুত ঠান্ডা করে ফ্রিজে না রাখা হয়, তবে এতে ব্যাসিলাস সিরাস নামক ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। পুনরায় গরম করার সময় এই ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি বিষাক্ত উপাদান শরীরে গিয়ে ডায়রিয়া, বমি ও হজমজনিত সমস্যা তৈরি করতে পারে।

৬. রান্নার তেল: বারবার ব্যবহারে বিষক্রিয়া
একবার ব্যবহৃত তেল দ্বিতীয়বার গরম করলে তাতে টক্সিক উপাদান তৈরি হয়, যা কার্সিনোজেনিক হতে পারে। বিশেষ করে ডিপ ফ্রাই করা খাবারের তেল পুনর্ব্যবহার একেবারেই অনুচিত। এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

৭. প্রক্রিয়াজাত খাবার: সসেজ, বার্গার প্যাটি ইত্যাদি
সসেজ, প্রসেসড মিট বা প্রিজারভড খাবার পুনরায় গরম করলে এতে থাকা সংরক্ষক রাসায়নিক উপাদানগুলো ভেঙে গিয়ে বিষক্রিয়া তৈরি করে। লিভার ও কিডনির ওপর মারাত্মক চাপ পড়ে।

 সচেতন হোন, সুস্থ থাকুন
রোজকার খাবারে আমরা যেসব জিনিস খাচ্ছি, সেগুলোই যদি অসতর্কতায় শরীরের ক্ষতি করে, তবে আমাদের উচিত এখনই অভ্যাস বদলানো। সময় বাঁচানোর চেয়ে স্বাস্থ্য রক্ষা অনেক বেশি জরুরি।

এসএফ 

×