
গরমের দিনে তরমুজ মানেই একটুখানি স্বস্তি। তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতেও এই রসাল ফলের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু তরমুজ খাওয়ার পর আমরা প্রায় সবাই তার বিচিগুলো সরিয়ে ফেলি।ভাবি, সেগুলোর কোনো কাজে নেই। অথচ এই ছোট ছোট বিচিতেই লুকিয়ে আছে একাধিক মূল্যবান পুষ্টি উপাদান, যা শরীরের জন্য হতে পারে এক দুর্দান্ত শক্তির উৎস।
কেন অবহেলা নয়, গুরুত্ব দেওয়া উচিত এই বিচিগুলোকে?
তরমুজের বিচি শুধুই খোসা ফেলার মতো কোনো আবর্জনা নয়। সঠিকভাবে শুকিয়ে বা ভেজে নিলে এগুলো হতে পারে এক স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর স্ন্যাকস। এতে রয়েছে এমন কিছু উপাদান, যা শরীরের নানামুখী চাহিদা পূরণে সহায়ক। চলুন জেনে নিই, কী কী পুষ্টিগুণ আছে তরমুজের এই ফেলে দেওয়া বিচিতে-
১. কম ক্যালরি, বেশি পুষ্টি
এক মুঠো (প্রায় ৪ গ্রাম) তরমুজ বিচিতে থাকে মাত্র ২৩ ক্যালরি। এটি একটি হালকা স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়ার জন্য আদর্শ, বিশেষ করে যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করছেন, তাদের জন্য।
২. ম্যাগনেসিয়ামের দারুণ উৎস
মাত্র ৪ গ্রাম বিচিতে থাকে প্রায় ২১ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, যা শরীরের স্নায়ু, হাড় ও হৃদ্যন্ত্রের কার্যকারিতায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দৈনিক চাহিদার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পূরণ করে এই খনিজ উপাদান।
৩. আয়রন সরবরাহ করে
প্রতিদিনের শরীরের প্রয়োজনীয় আয়রনের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করতে পারে এই বিচি। যদিও পরিমাণ তুলনামূলক কম, তবুও নিয়মিত খেলে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়ক হয় এবং শরীরে অক্সিজেন পরিবহন প্রক্রিয়া উন্নত করে।
৪. রয়েছে উপকারী চর্বি
তরমুজ বিচিতে পাওয়া যায় মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা হৃদ্স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে।
৫. রয়েছে দস্তাও
এই বিচি দস্তারও ভালো উৎস। এক মুঠো বিচিতে পাওয়া যায় প্রায় দৈনিক চাহিদার ৪ শতাংশ দস্তা, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, কোষ পুনর্গঠন ও স্নায়ুর কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
কীভাবে খাবেন তরমুজ বিচি?
তরমুজ খাওয়ার পর বিচিগুলো পরিষ্কার করে রোদে শুকিয়ে নিতে পারেন। তারপর ওভেনে বা প্যানে হালকা ভেজে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে একটি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস। স্বাদ বাড়াতে চাইলে সামান্য অলিভ অয়েল, লবণ, দারচিনি বা মরিচগুঁড়ো যোগ করতে পারেন নিজের পছন্দমতো।
যা এতদিন আপনি অবহেলায় ফেলে দিচ্ছিলেন, সেটিই হতে পারে আপনার পরবর্তী সুপারফুড! তরমুজ বিচি শুধু পুষ্টিগুণেই সমৃদ্ধ নয়, এটি চিপস বা ফাস্টফুডের স্বাস্থ্যকর বিকল্পও। তবে খেয়াল রাখুন সঠিক পরিমাণ ও পদ্ধতিতে খাওয়াই দেবে কাঙ্ক্ষিত উপকার। এবার থেকে তাই তরমুজ খাওয়ার সময় বিচি ফেলার আগে দু’বার ভাববেন তো বটেই।
সূত্র:https://tinyurl.com/4fcwskh7
আফরোজা