ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জাপানে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে ক্ষোভ ঝাড়লেন মির্জা আব্বাস

প্রকাশিত: ১৩:৩৯, ৩০ মে ২০২৫

জাপানে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে ক্ষোভ ঝাড়লেন মির্জা আব্বাস

ছবি : সংগৃহীত

‘ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন দেশের ‘এক ব্যক্তিই চান না’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা আব্বাস।

শুক্রবার সকালে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পরে জাপানে প্রধান উপদেষ্টার এক বক্তব্যের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এরকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘‘খুব দুঃখের সঙ্গে বলছি, দেখলাম ড. মুহাম্মদ ইউনুস সাহেব (প্রধান উপদেষ্টা) জাপানে বসে বিএনপির বদনাম করছেন। একটু লজ্জাও লাগল না দেশের সম্পর্কে বিদেশে বসে বদনাম করতে। তিনি বললেন, একটি দল নির্বাচন চায়।”

‘‘আর আমরা বলতে চাই, একটি লোক নির্বাচন চায় না… সে হলো ড. ইউনুস (মুহাম্মদ ইউনুস), উনি নির্বাচন চান না।”

গতকাল জাপানের টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে ৩০তম নিক্কেই ফোরামে ‘ফিউচার অব এশিয়া’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘‘আমরা জনগণকে বলেছি, নির্বাচন এই বছরের শেষে ডিসেম্বরে অথবা সর্বোচ্চ জুনে অনুষ্ঠিত হবে।” তবে কিছু রাজনীতিবিদ নির্বাচনের জন্য জুন পর্যন্ত অপেক্ষা কেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন কেন নয়, সেই প্রশ্নও তুলেছেন। দেশের সব রাজনৈতিক দল নয়, শুধু একটি দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইছে বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।

‘নির্বাচন ডিসেম্বরেই, জুনে নয়’

মির্জা আব্বাস জোরালো কণ্ঠে বলেন, ‘‘বিএনপি বরাবরই নির্বাচন চেয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যে এবং এই ডিসেম্বরের কথা কিন্তু ইউনুস সাহেব স্বয়ং বলেছেন। আমরা বলিনি… তারই (অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস) প্রস্তাব। পরবর্তীতে তিনি শিফট করে চলে গেলেন জুন মাসে।”

‘‘জুন মাসে যদি নির্বাচনের কথা বলেন, এই নির্বাচন কখনো বাংলাদেশে হবে না। সুতরাং নির্বাচন যদি করতে হয় ডিসেম্বরের মধ্যেই করতে হবে।”

তিনি বলেন, ‘‘আর নির্বাচন যদি করতে না চান সেটা ইউনুস সাহেবের দায়-দায়িত্ব, আমাদের দায়-দায়িত্ব নয়।”

‘‘আমরা জাতি-জনগণ এই নির্বাচন আদায় করব… নইলে এ দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ঠিক থাকবে না।”

‘সংস্কার করতে কিছু বিদেশি আমদানি’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করতে হবে জাতিকে বিভিন্ন কারণেই। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, সংস্কার সংস্কার করতে করতে বর্তমান সরকার বহু লোককে আমদানি করেছেন সংস্কার করার জন্যে। আমি আজকে অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলতে চাই, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহু সংস্কার করেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে। কিন্তু বিদেশ থেকে কোনো পরামর্শক আনেন নাই……।”

‘‘আজকে এই সরকার কিছু বিদেশি লোককে আমদানি করেছেন দেশে সংস্কার করার জন্যে। এখন সংস্কার করতে করতে এমন জায়গায় চলে গেছে যে, তারা নির্বাচন দিতে চায় না।”

রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে আধুনিক বাংলাদেশের জনক হিসেবে অভিহিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘আমরা এই শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে উনার (জিয়াউর রহমান) জন্য দোয়া কামনা করছি… আল্লাহতাআলা যেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বেহেশত নসিব করেন।’’

এর আগে মির্জা আব্বাস দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধি প্রাঙ্গণে আসেন। কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পরে কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন তারা এবং এরপর প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন।

১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামে এক দল সৈন্যের গুলিতে নিহত হন জিয়া। বিএনপি এই দিনটি তার ‘শাহাদাত দিবস’ হিসেবে পালন করে।

সানজানা

×